মাহবুবা আখতারের একটি অনবদ্য অনুভূতির কবিতা “সুখের মহোৎসব’’

353
মাহবুবা আখতারের একটি অনবদ্য অনুভূতির কবিতা “সুখের মহোৎসব’’

‘সুখের মহোৎসব’
মাহবুবা আখতার

আমার একটি নির্দিষ্ট ঘর আছে, আছে ঠিকানা
মাটির দেয়াল, ছনের ছাউনির বাঁশের ছাদ।
খর রৌদ্রে স্নিগ্ধ শান্তির, পরম ভালোবাসার
ইচ্ছে হলেই তুলকালাম হুল্লোড়,চিৎকার, হেসে খুনসুটি,
ইচ্ছে হলেই সুখ-দুঃখের অলৌকিক স্টিমারের পাটাতনে
শুয়ে মহুয়ার মদিরায় বুঁদ হয়ে থাকা।

শাদা মেঘের চাদরে বেলী, হাসনুহেনার সুবাস জড়িয়ে নিভাঁজ শুচিতায় এলোমেলো স্বপ্নে ভেসে যাওয়া।
ইচ্ছে হলেই ঘরের বিছানা পত্র ছুঁড়ে ফেলে বালিশ ফুঁড়িয়ে তুলো উড়িয়ে দেয়া,
ইচ্ছে হলেই খান কতক বাসন কোসন ভেঙে দিয়ে, নিঃশব্দে শব্দের কান্না শোনা।

ইচ্ছে হলেই বিসমিল্লাহ খাঁয়ের রাগ, শচীন কর্তা
আব্বাসউদ্দীন, মান্না দে’র রেকর্ড প্লেয়ার ছেড়ে দিয়ে
নিজের খেয়ালী কণ্ঠ মিলিয়ে নেয়া।
ইচ্ছে হলেই ঘরের দরোজা,জানালা হাট করে খুলে দেয়া,ইচ্ছে হলেই জানালার ধারে বসে উত্তর ফাল্গুনীর
সাথে বন্ধুত্বে ভালোবাসার খুনসুটি করা।

ইচ্ছে হলেই স্মৃতির ঘরে ফিরে চিৎকার করে হু- হু কেঁদে ওঠা,
বুকের বরফ কষ্টগুলোকে গলিয়ে নদীর স্রেতে ভাসিয়ে দেয়া।
ধারে কাছে আপনার জন কেউ নেই, কিছু বলার কেউ নেই।
প্রতিদিনের দুঃখ-কষ্টে,আনন্দ-বিষাদে হঠাৎ করে যদি
কোনো’ সুজন’ হাত বাড়িয়ে আদর করে বলে,
আহা! অমন করে ভাবতে নেই এইতো আমি আছি ‘বন্ধু’ তোমার। এসো পরানের গহিনের জলে দুঃখ ভাসিয়ে ভালোবাসার চাষ দিই।

তখন কেনো জানি না আমার ঘরে-বাহিরে নক্ষত্রের নীল চাঁদোয়ায় আমজাদ খাঁয়ের তবলার বোল ছুটে
তাক-ডুম,তাক-ডুম,তাক ডুম আহা!
রঙধনু রঙের উৎসব ছুঁয়ে দেয় ভালোবাসার মিহিন চাদরে।
চকিতে বাসনার ইচ্ছেরা লুটোপুটি খেলে আত্মীক বোধে,
প্রেমে, প্রচণ্ড তৃষ্ণায় দেহে-মনে আমার ঘরে
উৎসব শুরু হয় সুখের।
ঘরের মায়া ভুলে আমি ঘর থেকে বেঘর হই সুখ সমর্পণের বিশ্বাসী মহোৎসবে।

লেখক স্বত্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here