ক্ষণিকের দুনিয়া
—– — এন এম রফিকুল ইসলাম।
আসতে যেতে ডানে বায়ে চাই
ছনে ঘাসে ছাওয়া ভূঁইয়ে,
বাঁশের ঝাঁড়ের কাঁচা পাঁকা বাঁশ
ছায়া ফেলে পড়েছে নুইয়ে।
সারে তিন হাত মাটির দেয়ালে
জরাজীর্ণ কত যে ঘর,
শুয়ে আছে কতই রথী মহারথী
সবই ফেলে পরপার।
ফকির বাদশাহ একসাথে ঘুমায়
পাশাপাশি শুয়ে শুয়ে একা,
মাটির বিছানা আর বাঁশের ছা’নি
হয়না’ক কারো সাথে দেখা।
হেঁটে চলি আর মনে মনে ভাবি
আর ক’দিন আছে বাকি,
সজল নয়নে চেয়ে চেয়ে শুধুই
জীবনের জলছবি আঁকি।
কিসের নেশায় কোন অভিলাষে
বাড়াইতেছি পাপের বোঝা,
অন্তিমকাল কত দূরে কে জানে
এসে যাবে দুয়ারে সোজা!
ধন দৌলত আর টাকাকড়ি যত
সারি সারি অট্টালিকা,
সোনা-দানা আর হিরে জহরত
সব কি কেবলি ধোঁকা!
রূপ যৌবনের কতই না জৌলুশ
আর শক্তির বাহাদুরি,
সকলই ফুরাবে বেলা অবসানে
অহংকারের জারিজুরি।
কোটি টাকা দিয়ে কেনা গাড়িখানি
গ্যারেজেই পড়ে রবে,
সেই মাটির ঘরে শেষ যাত্রার যান
বাঁশের খাঁটিয়াই হবে।
ভাই বেরাদার আর যত প্রিয়জন
যাবে নাতো সাথে কেহ,
মিছেমিছিই কত যে মায়ার বাঁধন
মিছেমিছি আদর স্নেহ।
অদূরে দাঁড়ায়ে আফসোসে শুধুই
ঝরাবে চোখের জল,
তোমার সঙ্গের সঙ্গী যে কেবলই
তোমার যা কর্মফল।
আসা-যাওয়ার মাঝখানে শুধুই
সামান্য কয়েকটি দিনে,
চির বিদায়ের স্মরণ গেছি ভুলে
বোঝাটা বাড়িয়েছি ঋণে।
করজোড়ে আজি ক্ষমা চাই প্রভু
আমি যে গো গুনাহগার,
তুমি যে দয়াময় করুণার আধার
করে নিও আমারে পাড়।।