“মানবিক কর্মশালা”
রোজিনা রুমি
সূর্য্য হেলে পড়া মাঘের দুপুর
সুনসান নিরবতা নিস্তব্ধতায় চারপাশ,
পুকুড় পাড়ে সারি সারি নারিকেল গাছের ছায়ায়
আনন্দের আসর বসেছে ঘু ঘু পাখির দল।
বিচরণ করছে আপন সুখে আপন মনে!
পিছনের ছোট্ট ঝুঁটি উঁচিয়ে নেচে নেচে আনন্দে মাতোয়ারা!
মিষ্টিকণ্ঠে আলাপচারিতায় মগ্ন অবুঝ পতঙ্গদল!
মৃদু হাওয়ায় দুলে যাওয়া পাতা শিষ দিয়ে যায় বারবার।
পরিবেশটা বড্ড নিরিবিলি, ক্লান্ত দুপুরের নিরবতা সব যেন ওদের অনুকূলে।
হিরন্ময় স্মৃতিকোষের ভান্ডারে নয়,
আরামে আয়েশে খুঁটে খুঁটে সঞ্চয় করছে ওরা ঐশ্বর্য্যমন্ডিত স্বর্গসুখ।
কারো প্রতি কেউ রুষ্ট নয়, নয় অপ্রীতি আলোক।
ব্যলকনির কিনারায় বসে অবলোকন করে যাচ্ছি এ খেলার উত্তর প্রান্তর।
কী সুখ মনে! কী সুখ প্রাণে!
নিরীহ পতঙ্গদলের ঐক্য আর সমন্বয়তা প্রাণভরে উপভোগ করা যায়,
বোধে আত্নস্ত্ব করা যায় অনেক কিছু।
হতভাগ্য, অসহায় আমরা
আমরা অন্ত্যজ, নির্বোধ,নিরক্ষর,কুলহারা, কলুষিত
তাই আমরা অপাঙক্তেয়—
কোন একতা নেই আমাদের, ধৈর্য্য, সহমর্মিতা নেই,
নেই সম্পর্ক রক্ষার মননশীলতা।
কতবার চেয়েছি কদর্যমাখা জাল ছিড়ে ছুড়ে চলে যাই,,
কোন এক পূণ্যরথে সামিল হই, নিজেকে নিয়োজিত করি মানবিক কর্মশালায়।
তবেই তো পূণ্যস্নানে স্নাত হবো;
স্মৃতির সোনালি সড়কে বিচরন করি প্রতিনিয়ত ,
কতটুকু সামর্থ্য আর তার কতটুকু অপারগতা,
কল্পনার মানসলোকে নয় এ জীবনের কাঙ্খিত দিনগুলিতে ভ্রমন করি বহু পথ প্রান্তর।
কত শহর নগর বন্দর পরিক্রম করি বহুক্রোশ
আত্নার প্রশান্তির আয়োজন নিয়তই চলে,
অষ্টাদশী চন্দ্রের প্রখরতায় তীব্র স্মৃতিরা সোনালি সড়ক ধরে হেটে বেড়ায়,
অপ্রতিভ প্রতিবন্ধকতায় আবার কখনো কখনো থেমে যায়।
এ পৃথিবী আমি চিনি, এ পৃথিবীর ধরন আমার চির চেনা
আজ তবে —আবার নতুন করে বিবেকের বোধ
জেগে উঠেছে মননে স্বননে।