মরণ_খেলা
মাহমুদা বেগম সিমু
রাতদিন কেটে যাচ্ছে মৃত্যু ভয়ে,
মরণঘাতী করোনা সারা বিশ্ব ঘিরে রেখেছে।
হারিয়ে যাচ্ছে নিজের অস্তিত্ব,সাহস আর বেঁচে থাকার প্রেরণা,
হারিয়ে যাচ্ছে আশা আকাঙ্ক্ষা।
হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ বনানীর প্রাণ চঞ্চল সুখ,
হারিয়ে যাচ্ছে রক্তে রাঙানো একুশের বর্ণমালার রূপ।
হারিয়ে যাচ্ছে ত্রিশ লক্ষ শহিদের স্বপ্নের গ্রাম,শহর,
হারিয়ে যাচ্ছে মধ্য বিত্ত আর গরীবের আহার।
হারিয়ে যাচ্ছে জ্ঞানী গুণী বুদ্ধিজীবী,
হারিয়ে যাচ্ছে কৃষিপ্রধান দেশের প্রাণের কৃষি।
প্রতিদিন খবর আসছে হাজার হাজার নতুন আক্রান্তের,
প্রতিদিনই খবর আসছে অগোনিত মৃত্যুর।
কবরস্থানে হচ্ছে গণ কবর,
আপনজনদে রয়ে যাচ্ছে চোখের পানিই সম্বল।
বড্ড জানতে ইচ্ছে করছে..
আবার কি শব্দরা ছবি আঁকবে–স্বপ্নের মত সুন্দর করে!
মেঘবালিকার মেঘের আঁচলের মায়ায়,
মিষ্টি করে ভিজবোকি আবার ভাবুক মনের বারান্দায়?
নাকি সবাই চলে যাবো মরণের পাল্লায়?
এভাবে মরতে মরতে সবাই কি মরে যাবে?
আমি,তুমি,সে?
তাহলে আমাদের বাঁচা মরার ইতিহাস কে লিখবে?
ইতিহাস লেখারও কেউ থাকবেনা?
পুড়ে যাচ্ছে বুকের সব আশা,চোখের জলে জ্বলছে জ্বলন্ত লাভা!
ঝলসে যাচ্ছে স্বপ্নরা!
চারিদিকে শুধু ধোঁয়া!
উফফ্ কী কষ্টের আনাগোনা !
গলার কাছে দলা পাকানো শ্বাসরুদ্ধকর যন্ত্রণা!
মাথায় ঘুরপাক খায় মৃত্যু কল্পনা!
বিশ্বাসহীন বাতাসের পাঁজরে মুঠো মুঠো বারুদের মতো
দগ্ধতা!
কি হবে আমাদের,কি হবে সবার জীবনটা?
স্মৃতির অবশেষে রয়ে যাবেকি শুধু গুঁড়ো গুঁড়ো ছাই পোড়া!
কানে ভেসে আসে জীবন্ত লাশেদের কান্না!
বুকের ভেতর পাড়-ভাঙার কোলাহল,
ঝরাপাতার ধূসর স্বরলিপিতে মনভাঙনের গান।
কানে আসে জীবনের সব স্বপ্ন ভাঙার শব্দ!
করোনা সারা বিশ্বকে নিজের কাছে করেছে জব্দ!
চারদিকে মরণঘাতীর আক্রমণের ভয়,
দাঁড়িয়ে আছি সবাই পৃথিবীর অস্তরাগের জানালায়।
সামনে শুধু নিদ্রাহীন অন্ধকার!
উথালপাতাল মন,কে কাকে করবে হুঁশিয়ার!
মনে ভাবনা আসে বারেবারে,এখনো বেঁচে আছি!ভালো আছি!
চিমটি কেটে বারবার দেখি, সত্যিই বেঁচে আছি?
এই মরণ খেলার বাজীমাতে সত্যিই বেঁচে আছি?
আবার চিমটি কেটে অনুভব করি,
হ্যাঁ সত্যিই এখনো বেঁচে আছি!
হে আল্লাহ তুমিই শেষ রক্ষা,
হে আল্লাহ তুমিই শেষ আশা,তুমিই ভরসা,
বন্ধ করো হে দয়াময় এই মরণঘাতীর মরণ খেলা।