কলমযোদ্ধা-আওলিয়া খানম এর ভিন্নধর্মী অসাধারণ লিখা “করোনা করোনা করোনা গল্প ”

713
কলমযোদ্ধা-আওলিয়া খানম এর ভিন্নধর্মী অসাধারণ লিখা “করোনা করোনা করোনা গল্প ”

করোনা করোনা করোনা গল্প

                                        —–আওলিয়া খানম ।

ভাসিটি বন্ধ হয়েছে। কবে যে খুলবে কে জানে।
অন্যসময় ভাসিটি বন্ধ হলেও হল খোলা থাকে। লাইব্রেরী খোলা থাকে ।
তাই নানা অজুহাতে হলে স্টুডেন্টরা থাকতে পারে।
রুমানার মনে হচ্ছে কতকাল হয়ে গেলো সে গ্রামে এসেছে । অবশ্য বাবা মা চাচা চাচী আরো গ্রামের আত্নিয়দের সাথে থাকতে ভালই লাগছে । সেইতো স্কুল পাশ করার পরেই প্রথমে জেলা শহরের কলেজে থেকে আইএসসি পাশ করার পর ঢাকায় ভার্সিটিতে ভর্তি হলো, পদার্থ বিদ্যায় ।আশা আছে প্রথম বিভাগ পেলে পিএইচডি করতে বাইরে যাবে। অথবা চেষ্টা করবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে ।
কিন্তু পৃথিবীর যে পরিস্থিতি, কি যে হয় শেষ পর্যন্ত কিছুই বুঝা যাচ্ছেনা। কি এক ভাইরাস আসলো,সমস্ত পৃথিবীর মানুষ এতে আক্রান্ত ।মানুষের স্বাভাবিক জিবন-যাপন তছনছ হয়ে যাচ্ছে ।
এরকম আর আমরা কখনো দেখিনি । তবে মায়ের কাছে কলেরা গুটিবসন্ত প্লেগ, ডিপথেরিয়া হাম এসবের কথা শুনেছি । তবে বেশী শুনেছি দাদীর কাছে । তিনি যখন ছোট ছিলেন তখন সেই ভয়ঙ্কর অসুখ গুটিবসন্ত হতো । তার মা নাকি তাদেরকে ঘরের বাইরে যেতে দিতোনা । আর নিমপাতার বড়ি মানে ট্যবলেট বানিয়ে খাওয়াতো ।তখন নাকি শীতকাল আসলেই গ্রামের মায়েরা নিমপাতা বেটে ছোট গোল গোল করে ট্যাবলেটের মত বানিয়ে রৌদ্রে শুকিয়ে কাচের বোতলে ভরে রেখে দিতো এবং প্রতিদিন সকালে একটা করে তিনি সব ছেলেমেয়েদেরেকে খাওয়াতেন । । তখন স্কুল বন্ধ হয়ে যেতো । কেও বাইরে খেলতে যেতোনা।দরজা বন্ধ রাখলেও গুটিবসন্তের আক্রান্ত মানুষের চিৎকার শোনা যেতো। এতে তারা সবাই ভয়ে কুঁকড়ে যেতো। কোন কাজে বাইরে গেলে ঘরে ঢোকার মুখেই নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গা ধূইয়ে দিতো।যাতে করে জীবানু চামড়ায় লেগে না থাকে ।
রুমানা ভাবছে আজ দাদী জীবিত থাকলে বলতো , কি অসুখ এলো,সবাইকে ঘরবন্দি করে ফেলছে। সেই আমাদের ছোটবেলার গুটিবসন্তের কালের মতো ।আরো হয়েছিল কলেরা ওটাও যে ঘরে ঢুকতো বা যে গ্রামে কারো হতো গ্রাম শেষ করে ফেলতো।
কবর খুড়ে দাফন করতে আর ম্বশানে লাশ পুড়াতে গিয়ে অনেক সময় তারাও অসুখে আক্রান্ত হয়ে যেতো।
আসলে কলেরা ছড়ানোর সবচেয়ে বড় কারন ছিল,পুকুরের পানি দিয়ে সবকিছু করা। যে পুকুরে কলেরা রোগীর কাপড় কাচতো সেই পুকুরের পানিই অন্য ঘাট থেকে কলসী ভরে খাওয়ার জন্য নিয়ে যেতো, গোসল করতো, আর তাতে করেই আক্রান্তের হারটা বেশী ছিল ।
কিন্তু এখন এই অত্যাধুনিক যুগেও তো একটা ভাইরাসকে সামাল দিতে পারছেনা। ইউরোপ আমেরিকা সব যায়গায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে । সেসব দেশ জ্ঞানে বিজ্ঞানে কত উন্নত, তারাই পারছেনা আর আমাদের দেশে ব্যাপক আকারে হলে দেশে হলে আমরা কি করে বাঁচবো ভেবেই পাচ্ছিনা।
নাহঃ আর ভাবতে ভাল লাগছেনা। এরই মধ্যে মা এসে বললো কিরে রুমানা, তুই অমন ঝিম মেরে বসে আছস কেন?
বললো, মা ভাল লাগছেনা।চারিদিকে এত মৃত্যু। ভাবছিলাম, আমদের দেশে যদি ইউরোপ আমেরিকার মত আক্রান্ত হতে থাকে, পারবে কি সামাল দিতে ।
রুমানার মা স্কুল ফাইনাল পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও তার জ্ঞান বুদ্ধি অনেক প্রখর ।তিনি উত্তরে জানালেন, ওগুলো শীতের দেশ, আমাদের দেশ গরমের দেশ । এদেশে অতটা বিস্তৃতি হবেনা সম্ভবতঃ
মা তুমি সম্ভবতঃ বলেছো, তার মানে হতেও পারে। দেখোনা দিন দিন আক্রান্তের হার বেড়েই চলছে ।
হুম ঠিকই বলছিস।
অনেক হয়েছে, কি হবে না হবে এসব ভবিষ্যৎ না ভেবে বর্তমানকে নষ্ট করার কোন মানেই হয়না। আর আলোচনার দরকার নেই। এবার চল বিকালের নাস্তা খাবি। তোর বড় চাচী নারিকেলের পিঠা বানিয়ে দিয়ে গেছে তোর জন্য । তোর বাবাও বসে আছে তোর জন্য, বলছে মেয়েটা এত দেরী করছে কেন?
মা তুমি যাও আমি আসছি ।

অয়ন্ এর সাথে দেখা নেই কতদিন হয়ে গেলো, । কবে যে ভার্সিটি খুলবে ,কে জানে একটা অনিশ্চিত জিবন পার করছি ।কথা যদিও হয় প্রায় রোজই। কিন্তু পাশাপাশি বসে গল্প করার যে আনন্দ তা কি মোবাইলে কথা বলে পাওয়া যায়।
অয়ন ঢাকাতেই থাকে ওর বাবা একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী । ও বিজ্ঞান নিয়ে পড়াতে ওর বাবা ওর উপর অনেক খাপ্পা ।বলে ব্যবসায়ীর ছেলে তুই আমার ব্যবসা দেখবি পড়বি ব্যবসাপ্রসাশন নিয়ে ,না পড়ছিস পদার্র্র্র্র্থ বিদ্যা ।
অয়ন বলে ,বাবা ব্যবসা চালাতে ব্যবসা প্রসাশন পড়তে হয়না।
তুমি যে ব্যবসা চালচ্ছো ,তুমি কি পড়েছো? তুমি যদি সাহিত্যে মাষ্টার্স করে ব্যবসা বুঝতে পারো তাইলে আমিও পারবো।
বাবা উত্তরে বলে, আরে আমি তো ঠেকে শিখেছি ।

বাবা এখন তো করোনার(কোভিড-১৯) এর জন্য তো এখন সমস্ত পৃথিবী  বন্ধ তাইলে কি তোমার কারখানাও এখন বন্ধ।
ব্যবসা বন্ধ ! তোকে কে বলেছে?
আমরা পিপিই বানাচ্ছি মাস্ক বানাচ্ছি ।
বুঝলি আমাদের কাজ কখনো বন্ধ হয়না।
কাপড় এমন একটা দ্রব্য যা ছাড়া মানুষের চলেনইনা।

এরই মধ্যে অয়ন্ এর কল আসলো,কল করেছে ওর এক বন্ধু ।
সে পড়ে বুয়েটে ।
কিরে দোস্ত কেমন আছিস?
আর বলিসনা ঘরে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠছি ।
কিছু করার নাইরে দোস্ত। জীবন থমকে গেছে।
সমস্ত পৃথিবী আজ একজায়গায় ঠায় দাড়িয়ে গেছে ।
শুধু মৃত্যু মৃত্যু আর মৃত্যু ।
আমেরিকা মৃত্যতে প্রথম হয়ে যাচ্চ্ছে , ওরা জ্ঞানে বিজ্ঞানে এত উন্নত,,অথচ দেখ রোগের কাছে একটা অদেখা ভাইরাসের কাছে কতটা অসহায় ।
প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষ মারা পড়ছে ।
কেও কিছু করতে পারছেনা।
চীন দেশে যখন শুরু হলো,আমরা পাত্তাই দেইনি,ভাবছি ওর পোকা-মাকড় সাপ ব্যঙ বাদুর এসব হাবিজাবি খায়,তাই ওদের আজে বাজে অসুখ হচ্ছে।
কেও ঘুনাক্ষরেও ভাবেনি এই অসুখে ইউরোপ আমেরিকায় হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে।
লকডাউন হোম কোয়ারেন্টাইন কোন কিছুতেই রোগের বিস্তৃতি থামছেনা।
অয়ন বললো,জানিস রাহাত,আমার না খবর দেখতে একদম ভালো লাগেনা। তবু কি করবো । মা দেখে বাবা দেখে, ছোট বোন ভাই ওরাও দেখে, আর আমাকে ডাকে আর বলে একা একা থাকিস না ।তাই আমিও ওদের সাথে দেখি ।
পৃথিবীর সব খবরের চ্যানেল আজ শুধু মৃত্যু আর কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের খবর দেখাচ্ছে ।
বাদ দে, দেখ আমরাও কিন্তু কোভিড -১৯ এ আক্রান্ত। আমরা কথা বলছি তাও এটা চলে আসছেই । আমরা কিছুতেই এই চক্র থেকে বেরুতে পারছিনা। আমরা কে যে কবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যাই,জানিনারে দোস্ত ।বাদ দে এসব কথা ভাল্লাগেনা।

আচ্ছা দোস্ত বল রুমানার খবর কি? ও কোথায়?
কোথায় আর থাকবে? আমরা যেমন আমাদের যার যার বাড়ীতে সেও তার বাড়ীতে।
ওরাতো মফস্বলে থাকে,তাইনা?
না ওরা গ্রামের বাড়ীতে থাকে, ওর বাবা গ্রামের স্কুলের প্রধান শিক্ষক ।
তোর সাথে কথা হয়তো ।
প্রায় রোজই হয় ।
ওদের ওখানে কি কোভিড-১৯ আছে?
আছে মানে ওদের গ্রামই লকডাউন । একজন করোনা রুগী পাওেয়া গেছে আরো বিভিন্ন বাড়ীতে ইটালী ফেরত কিছু লোক থাকাতে, পুরো গ্রামই লকডাউন।তাই মনটা খারাপ । কখন যে কার কি হয় ।
এবারের ধাক্কায় কে যে বাঁচবে আর কে যে মারা পড়বে আমরা কেও জানিনা।
পুরো পৃথিবী  একটা ভয়ংকর দুঃসময় পার করছে ।
তবে কবির ভাষায় বলতে হয়
আবার জমবে মেলা বটতলা হাটখোলা ।
হ্যা দোস্ত তোর কথাই যেন সত্যি হয় ।
ভার্সিটি মনে হয় ঈদের আগে আর খুলবেনা।
তাইতো কেমন করে খুলবে, রোজাতো এসেই গেল ।এখনতো খোলার প্রশ্নই আসেনা।
হুম তাই ভাবছি ।পড়াশুনা গোল্রায় গেলো ।
আরে না কিছুদিন পিছাবে,কি আর হবে ।
আগেতো বাঁচি তারপর পড়াশুনা।
আজ সিংগাপুরের রিসার্স রিপোর্র্ট দেখেছিস, মে মাসের ১৫ থেকে করোনাভাইরাসের আর কোন নূতন আক্রান্ত হবেনা এবং ডিসেম্বর নাগাদ ব্শ্বি থেকে একেবারে বিদায় নেবে ।
দেখলাম।
যাইহোক যেভাবেই হোক আপদ বিদায় নিক ।আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাই ।
ভাল লাগছেনা।
শুধু খাওয়া ঘুমানো আর খবর দেখা তাও যা একখানা খবর, শুধুই করোনায় আক্রান্ত আর মৃত্যুর খবর ।
এরই মধ্যে অয়ন এর মা এসে বললো, কিরে অনেকক্ষন যাবত কথা বলছিস ,কথা শেষ হলে খেতে আসিস।টেবিলে ভাত দেয়া হয়েছে । তোর বাবা তোর জন্য অপেক্ষা করছে আর বলছে, দুর্যোগ দৈব দুর্বিপাক যাই হোকনা কেন ছেলেটা সাথে আছে,তাতেই ভাল লাগছে । এক বাসায় থেকেও ছেলের সাথে দেখাই হতোনা ।ও কখন আসে কখন যায় আমার দেখাই হতোনা,একসাথে খাওয়াতো দুরের কথা।
তবে যে যাই বলুক , আমার কিন্তু সময়টা খুব ভাল লাগছে ।

যেতে যেতে অয়নকে তার মা বললো জানিস. আমাদের বাসায় যে তোদের গ্রামের একজন থাকতো, তোর কি মনে আছে অয়ন একটু থেমে বললো,হুম কিছুটা মনে আছে কেন হঠাৎ উনাকে খোঁজ করছো, উনি সপরিবারে ইটালী থাকতেন, গতকাল তার স্ত্রী মারা গিয়েছে. আর তিনিও ভেন্টিলেশনে আছেন । ছেলে মেয়ে দুজনই বাসায় লকডাউন এ আছে তারা তাদের বাবা-মাকে গিয়ে দেখতেও পারছেনা। অয়ন স্তব্দ হয়ে দাড়িয়ে গেল আর বললো তোমরা কি করে জানলে ?
তোর বাবাকে কে যেন হোয়াটআপ এ ফোন করে বলেছে ।
মা তুমি কি একটা ভয়ঙ্কর কথা শুনালে?
যদি উনাদের কাওকেই আমি চিনিনা,তবু তোমাদের তো চেনা ছিল। এই প্রথম আমি কোন চেনা মানুষ মারা গিয়েছে করোনায় জানলাম।
মা হেনা বললেন,বাবা জন্ম মৃত্যু নিয়েই এই ভূমন্ডল্ ।
“ জন্মিলে মরিতে হইবে” এটাই নিয়তির বিধান ।
তোর বাবা তোর জন্য অপেক্ষা করছে একসাথে খাবে । যা তুই টেবিলে যা,
মা তুমি খাবেনা। খাবো বাবা,আসছি ।

অয়ন কিছুতেই ভূলতে পারছেনা মার দেয়া ঐ খবরের বিষয়টা ।বাবাকে বলতে গিয়েও থমকে গেল, থাক বলার দরকার নেই।বাবা টিভিতে একটা পুরোনো নাটক দেখছে ।
এখন তো আর নূতন কিছু তৈরী হচ্ছেনা তাই আর্কাইভ থেকেই দেখিয়ে সময় পার করছে ।
এরই মধ্যে মা এসে বললো, ওমা তোমরা এখনো কেও শুরুই করোনি।
অয়ন এর বাবা মুখ ঘুরিয়ে বললো, তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম ।
ঠিক আছে ,আমি প্লেটে তুলে দিচ্ছি,শুরু করো. সব ঠান্ডা হয়ে গেলো।
অয়ন ভাত খেতে পারছেনা । হাত দিয়ে শুধূ নাড়াচাড়া করছে । তার মনটা কেমন য়েন হয়ে গেছে ।
কি ভয়ঙ্কর খবর। অন্যদের মৃত্যু সংবাদ আর পরিচিত কারো মৃত্যুসংবাদ যে এক নয় এই প্রথম অয়ন অনুধাবন করতে পারলো।
হঠাৎ মা ওর দিকে তাকিয়ে বললো, কিরে তুইতো কিছুই খাসনি?
মাছ ভাজাটা তোর এত পছন্দের তুই একটুও খাসনি।
মা আজ শুকনো খাবার খেতে ইচ্ছে করছেনা।
ডাল দিয়ে খাবো ।
মা হেনা বললো মাছভাজাটা তুলে রাখ । ডাল আর মুরগী নিয়ে খেয়ে ফেল।
অয়ন ডাল দিয়ে আর মাংশ একটুকরা নিয়ে ঐ দিয়ে খেয়ে উঠে গেল।
বাবা বললো অত তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠে গেল ।
অয়ন এর বাবা বললো, কিরে এত কম খেলে চলবে?
বাবা ,তুমি কিয়ে বলনা,সব সময় কি একরকম খাওয়া যায় ?
ঘরে বসে থেকে থেকে বোর হয়ে যাচ্ছি ।
শোন খবর শোন কি বলছে । সিঙ্গাপুর থেকে গবেষনা করে বলছে,৩০ মে মধ্যে বাংলাদেশ থেকে করো ৯৭% চলে যাবে এবং জুলাই ১৫ তে একবারে চলে যাবে আর সমগ্র পৃথিবী থেকে ডিসেম্বরে বিদায় হবে।
কাজেই অত চিন্তার কিছু নাই।
অয়নের তবু কেন জানি বার বার সেই অদেখা ছেলেমেয়ে দুটোর কথা মনে হচ্ছে ।
ভাবতে ভাবতেই মাকে বললো,মা ওদের কোন ফোন নম্বর আছে তোমার কাছে?
না বাবা নেই, তুইতো ওদেরকে চিনিস না আমরাও চিনি না। ওদের জন্মই হয়েছে ওদেশে। ঐ ভদ্রলোক ইটালী যাওয়ার সময় আমাদের বাসায় থেকে কাগজপত্র ঠিকঠাক করেছিল। তারপর আর আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি।
তাই তুই ফোন করে কি বলবি কি পরিচয় দিবি।
না এমনি ফোন করে একটু সমবেদনা জানাতে চেয়েছিলাম ।
ঠিক আছে আমি দেখি তোর বাবার কাছে আছে কিনা, থাকলে তোকে দিতে বলবো।
অয়ন এর মা তার বাবাকে বললো, অয়ন ওদের ফোন নম্বর চায় ঐ ভদ্রলোকের বাচ্চাদের সাথে কথা বলবে।আচ্ছা দেখি আমি হাশেম এর সাথে কথা বলে নিয়ে নিবো।
অয়ন এর মা বললো,হাশেম আবার কে?
অয়ন এর বাবা বললো ওইতো ফোন করে জানালো । ওর বাড়ীও আমাদের গ্রামেই । ওরা কেওই আমাদের জ্ঞাতি গোষ্টি নয়,এমনি গ্রাম সম্পর্কিয়,।
অয়ন ওদের ফোন ন্মবর দিয়ে কি করবে?
ওর মা বললো, ও নাকি ওদের সাথে কথা বলবে ।
ও কোথায়, ওকে ডাক আমার কাছে ।
ওকে তুমি বললে কেন?
আমি তো বুঝিনি অমনভাবে রিএ্যাক্ট করবে ।
কতলোকইতো মারা যাচ্ছে
অয়ন এব বাবা বললো,ও তো সবার মতো নয় । ওর সব বিষয়েই ফিলিংস একটু
বেশী ।
ফোন নম্বর নিয়ে ফোন করলো, একটা মেয়ে ফোন ধরে ইটালিয়ান ভাষায় কি যেন বললো, অয়ন ইংরেজিতে বললো, আমি বাংলাদেশ থেকে বলছি,তোমার বাবার মৃত্যুতে আমারা শোকাহত ।
ওরাও উত্তরে বললো, খুব ভাল কিন্তু তুমি কে আমরা তো তোমাকে চিনিনা।
অয়ন এর কথা বলে মনে হল, ওদের মা মারা গিয়েছে, লাশ দেখতে পারেনি, বাবা বেঁচে থাকবে কিনা জানা নেই ।
অয়নের মনে হলো ওদের তেমন অনূভূতি নেই ।
এর ফলে যা হলো অয়নের মনের বিষাদ ভাবটা কেটে গেলো ।
অয়নের মা বললো, কিরে কথা হয়েছে ।
তেমন হয়নি ,কারন ওরা ইংরেজি তেমন একটা বুঝেনা বা জানেনা । ওরা জানে ইটালিয়ান ভাষা । তাই ওদের সাথে কথা বলা মুশকিল,।
আরো মনে হল ওদের মা বাবার জন্য তেমন একটা ফিলিংস নেই ।
কার সাথে যেন ওর ভাইটা কথা বলছিল আরেকটা ফোনে।হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো ।
ওর মা মনে মনে ভাবলো, যাক ছেলেটা মনমরা হয়ে গিয়েছিলো । ফোন করে কথা বলাতে ঘোরটা কেটে গেছে । একদিক থেকে ভালই হলো ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here