একটি নতুন ভোর
রীতা ধর
হাতে হাত রাখা অনুপম নির্ভরতাও
স্পর্শহীন আজ; বিরূপ প্রকৃতির দূরত্বে
ভেসে আছে দু’জনার শুভদৃষ্টি।
কতোদিন হাতে হাত ছুঁয়ে হাঁটা হয়নি
একটি ভোর,
কতোদিন কাঁধে রাখিনি মাথা, কাটেনি
ক্লান্তির ঘোর।
শুধু কাঁচের ফাঁক গলা এক ঝলক রৌদ্রকণায় স্মৃতিটুকু আগলে গৃহবন্দি বাঁচার প্রয়াস,
নীরব যুদ্ধের আর্তনাদে পৃথিবী স্তব্ধ।
চোখের কোণে জমে থাকা কান্নার ছাপ কাউকে বোঝানোর নয়, বাকরুদ্ধ।
নাড়ি ছেঁড়া ধন পড়ে রয় সুদূর ঠিকানায়
বিন্দু বিন্দু প্রহর গুনে পথপানে চেয়ে ;
হায়! প্রিয় মুখচ্ছবি, হায়! স্নেহের সুখ,
কবে বুকে আগলে নেয় মায়ের বুক।
বাতাসে বাতাসে ভাসে মরণ ভাইরাস,
হাত বাড়ালেই মৃত্যু ছোবল
সমগ্র পৃথিবী জুড়ে ভ্রষ্ট কীটের ত্রাস।
অসহায় সহায় খুঁজে ধর্মের দ্বারে ;
আজ ধর্মই শুধু বাঁচার আশ্বাস।
মন তবুও পড়ে থাকে বটের ছায়ায়,
মন তবুও পড়ে থাকে হাওড়ে আউশ দানায়,
মন তবুও পড়ে থাকে বোশেখের দাওয়ায়
আয়েশী পাটির ঘুমে, নরম পাখায়।
অনাগত প্রজন্ম দেখুক এসে,
কত প্রাণ কেড়েছে পবন হুতাশ
কত কষ্টে গণকবরের ভয়ঙ্কর নিরবতায়
প্রাণখানি রেখেছে ধরে বিষাক্ত শ্বাস।
ক্ষুধার যন্ত্রণায় সুস্থ মানবতা গেছে সরে ; সান্ত্বনা কে দেয় আর কারে!
দংশিত আমিও! দেখুক অনাগত এসে,
ইতিহাস আমিও হয়তো আগামী প্রভাতে।
প্রকৃতির জয় নিশ্চিত জেনে অনাগতের তরে খুলে রাখি ইতিহাস দোর ,
ত্রাস কমে গেলে তুমি লিখে দিও প্রকৃতির জয়,
লিখে দিও একটি নতুন ভোর।