অতন্দ্র প্রহরী
সাহানুকা হাসান শিখা
কোন এক মায়াবী গোধুলী সন্ধ্যায়
খুঁজি আমার কাঙ্খিত সুখ সেথায়।
হঠাৎ শুনি রাখাল ছেলে রামচরণ
বাজায় পাতার বাঁশী কি যে দারুণ।
চা বাগানের ক্লান্ত শ্রমিক নারী
মাথায় নিয়ে চা পাতার ঝুড়ি,
নাম ছিলো তাদের ফুলমনী,আর দুলারী।
সারি বেঁধে চলতো তারা,দেখতে লাগতো ভারী।
দূর হতে ভেসে আসে দুর্গা ঘরের কীর্তন,
এখানে নেই কোন ধর্মের আবর্তন।
“দেবতারও নয়নও তোলায় জাগো জাগো গণশ্যাম”
এই ছিল তাদের গান,হরে কৃষ্ণ হরে রাম।
সন্ধ্যা প্রদীপ হাতে কপালে লাল টকটকে সিঁদুর
পাশের বাসার বউদিরা যোগাড় দিত মধুর।
ঐ যে অন্জলী দি বসেছে রেওয়াজে,
কণ্ঠে যে তার রাগ ইমনের কাজ।
কখনও গাইতো নজরুল সঙ্গীতের তান,
“আমায় নহে গো ভালোবাস শুধু ভালোবাস মোর গান”
ধূপের সুবাস ছড়িয়ে যেতো পুরো বাসাটি জুড়ে,
ঝি ঝিঁ পোকার অবিরাম সুর,জোনাকিরা উড়ে।
কলতলাতে বেড়ার উপর লক্ষী পেঁচাটি বসে
এক নয়নে আছে চেয়ে,চোখটা পড়বে খসে।
ভয় পেয়ে বললাম তারে এই হুতুম ভাগ,
নড়লো না তো এক চুল, করলো আবার রাগ।
সুযুগ বুঝে শেয়াল মশাই জুড়ে দিলেন হাঁক
হাঁস মুরগী খোয়ারে যাচ্ছে শুনে এই ডাক।
আকাশ পানে তাঁকিয়ে দেখি জ্বলছে সন্ধ্যাতারা
জানি না তো কখন আমি হলাম আপন হারা।