সময়ের পরোয়ানা
জেসমিন জাহান
চুপিসারে চলে যায় বসন্ত সময়
গহীন অরণ্যে পথ খুঁজে খুঁজে
সবুজ অন্ধকারে হেঁটে বহুদূর
টুকরো মেঘের সলতে জ্বেলে
ভরিয়ে দিতে চেয়েছি
উজ্জ্বল আলোর ফুলকিমালা
চৌকোণা আইল ধরে চলেছি
কোথাও দেখিনি পথের রেখা।
বর্ষা সময় চলে গ্যাছে অজান্তেই
ঘন কালো মেঘ অঝোরে ঝরে
উপেক্ষার কষ্ট বুকে নিয়ে কখন
জমাট বেঁধেছে হিমানি পর্বতে।
আমার উষর ভূমি পতিত
নিগৃহীত হয়ে অবশেষে
গহীন সমুদ্রের অতলে ডুবেছে
কেটেছে অন্তত প্রহর স্বপ্নেরও
ঢেউয়ের মাথায় দেখেছি দলিত
ফসফরাসের বর্ণীল-দীপাবলি।
এখন চৈত্রের দারুণ খরায় পুড়ছে
সাধ করে তুলে রাখা স্মৃতির পাতা
চৌচির হয়ে ফাটে গেরুয়া জমিন
জীবনকে জানবার দেয়নি অবসর
কালবৈশাখীর দাপুটে বাতাসও
বয়ে আনে আদিম কামনার রসদ
রাস্তায়-উদ্যানে,দুর্বা ঘাসের বুকে
আজ কেবলই নগ্ন উল্লাস
ঘুম ভাঙা ভোরের শুভ্র সকাল
কলঙ্কের নীল চাদরে ঢাকা।
সাইক্লোন-মহামারী-দুর্ভিক্ষ কিংবা
অতিপ্রাকৃত ভয়াবহ ঘুর্ণীঝড়েও
উড়িয়ে নিতে পারেনি তার তীব্রতা
অসহনীয় পুতিগন্ধ বাতাসে আজ
চোখের পর্দাটা ঘোলা হয়ে আছে
মিথ্যের ছায়াছবি প্রদর্শিত যত্রতত্র
সত্যের নিশানা খুঁজো না
ডাস্টবিন হাতরে দ্যাখো
নোংরা ময়লার স্তুপে চাপা পড়েছে।
বেরিয়ে এসো গোলক ধাঁধা থেকে
পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগেই চলো
ঘুরে দাঁড়াই শুদ্ধতার ঝাণ্ডা ওড়াই।