ভারত থেকে বিশিষ্ট সাহিত্যিক অগ্নিমিতা দাসের বাকরুদ্ধ জীবনের গল্প “নিশির ডাক ”

260
অগ্নিমিতা দাসের বাকরুদ্ধ জীবনের গল্প “নিশির ডাক ”

নিশির ডাক_

©অগ্নিমিতা দাস

হ্যাঁ লো! ছুঁড়িকে শুনলাম নিশিতে পায়! তা ঝাঁড়ফুক কিছু করলি! টানা বারান্দায় শীতের মরা রোদ এসে পড়েছে, তাতে পিঠ দিয়ে বসে ফোকলা দাঁতে ওপাড়ার মজুমদারদের ঠাকমা কথাটা পাড়লো। কুটনো কুটতে কুটতে মিনতি একবার ঘরের ভেতরটা চট করে দেখে বললতোমার কোন চেনাজানা ওঝা বা গুনীন আছে। আমাদের কর্তা শুনলে তো বাড়িমাত করবে। উনি পরামর্শ করছেন কোলকাতায় গিয়ে চিকিৎসে করাবেন। আমি মুখ্যসুখ্য হলে ও মা তো! বেশ বুঝতে পারি এ ডাক্তারের সারানো কর্ম নয়। থেকে থেকেই মেয়ে রাতবিরেতে দরজা খোলা পেলেই গ্রামের শ্মশানে না হলে , ক্ষেতে না হলে ভূতুড়ে পোড়া জমিদার বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়। আমরা তো সবসময় তটস্থ থাকি। কিন্তু ঠিক একটু নজর ঢিলে হলেই মেয়ে নিশি পাওয়ার মতো ঘোরে হাঁটে। তখন কাউকে চিনতে পারে না। ওর বাপ , হারু পিছু পিছু হাঁক দিতেই ওর নেশা কাটে। তখন চারিদিক অন্ধকার দেখে ভয়ে কাঁদে। মেয়েমানুষ রাত বিরাতে বেরোলে কখন কি হয় ? মিনতি বটি ছেড়ে দুহাত উপরের দিকে গড় করলো।
কত ঠাকুর, পীর বাবার দরগায় গেছি । যে যেখানে বলেছে। কত দূর দূর মেয়েকে নিয়ে ছুটেছি, কিসু হয় নি।
_ দুপুরবেলায় নিশ্চয়ই তোমার ধিঙ্গি মেয়ে খোলা চুলে মুখার্জীদের বটতলা দিয়ে গিয়েছিল নয় তো হালদারের পুকুরঘাটে বসে বসে আচার সাঁটাছিলো। কিছু মনে করো না বৌমা, তোমার মেয়ে ও কম চরে বেড়ুনে নয়। মিনতি ভয়ংকর মুখরা, অন্যসময় হলে এই ঠাকমার বাপবাপান্ত করে ছাড়তো। বয়স্ক বলে রেহাই দিতো না, কিন্তু এই বুড়ির কাছে অনেক সুলুকসন্ধান আছে। আমি তাহলে আসি! শনিবার আমি ওঝাকে নিয়ে দুপুরবেলায় আসবো খন। তোমার মরদটাকে আগে বলে রেখো বাপু! আর ওই ছুঁড়িকে চান টান করিয়ে একেবারে শুদ্ধ করে রেখো। এখন ওর মাসিকের সময় নয় তো? মিনতি মাথা নাড়তেই বুড়ি ভাঙ্গা মাজা নিয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে ঠুকটুক করতে করতে এগোলো।
কোলকাতা থেকে বেশ কিছুটা দূরে এই গ্রামটা প্রায় বড়োসড়ো গন্জের মতোই। কিন্তু এই হৃদয়পুরের মানুষজনের হৃদয়ে এখনো সেই শ্যাওলা পড়া সেকেলেপনা যায় নি। তাই শিউলির নিশিতে পাওয়া নিয়ে মেয়েদের পুকুর ঘাটে, বটতলায় বুড়োদের আসরে চললো জোর চর্চা।
আসলে শিউলির এই নিশি অভিযানে গ্রামের বেশ কিছু মানুষের মুস্কিল হয়ে গিয়েছিলো।
মধ্যরাতে চুপিসারে পুকুরপাড়ে দত্তজেঠু যখন ওর বিধবা ভাইয়ের বৌকে জামাকাপড় খুলে আদর করতো তখন হঠাৎ করে শিউলির আগমনে ওরা অস্বস্তিতে পড়তো। কিন্তু শিউলির তো কোন বিকার ছিলো না, সে আচ্ছন্নের মতো পাশ কাটিয়ে হেঁটে যেতো। শিউলি যদি ঘুমের ঘোরে না থাকতো তাহলে শ্মশানে মন্দিরের পুরোহিতের কাছে চুপিচুপি ঘোষালদের বড় বৌকে স্বামীকে বশ করার জন্য তাবিজ নিতে, আঁচল থেকে ভারি ভারি গয়না বার করে দিতে দেখতে পেতো। কিন্তু অন্যরা ওর এই উপস্থিতিতে বেজায় চটতো।
শিউলি এই গ্রামেরই হাইস্কুলে ক্লাস এইটে পড়ে। লেখাপড়ায় বেশ ভালো, ছবি আঁকতে ভালোবাসে আর ভালোবাসে বই পড়তে। সেই ভালোবাসার রসদ জোগায় ওর বাবা পীতম্বর লাহিড়ী। পাশের গ্রামের হাইস্কুলের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক।
শিউলির যখন ছ বছর বয়স, তখন থেকেই নাকি এই রোগের উৎপত্তি। সারাদিন কোন ঝুটঝামেলা নেই। মধ্যরাতেই ঘুমের ঘোরে হাঁটতো। তখন নাকি তার মা তাবিজ কবজ কি সব করেছিলো। কিন্তু ইদানিং বছরখানেক হলো রোগটা বেড়েছে। ভয়ে ভাই হারু ওর সাথে শুতে চায় না। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে ও লাভ হয় নি। গ্রামের নিয়মমতো ঘরের বাইরে উঠোনে বাথরুম থাকার জন্য মাঝে মাঝে শিউলি দরজায় ধাক্কা দিলেই খুলে দিতে হতো। তখন মিনতি হয়তো ঘুমের ঘোরে দরজা দিতে ভুলে যেতো। অমনি ভোররাতে মেয়ে হাওয়া। পাড়ার সবাই লন্ঠন নিয়ে খোঁজাখুঁজির পর দেখা মিলতো।কখনো শস্যক্ষেতে বা কখনো গোলাবাড়িতে তো কখনো পুকুরঘাটে জলে পা ডুবিয়ে । মেয়ে যেন তখন অন্য জগতের বাসিন্দা, সবাই ঠ্যালা দিয়ে ডাকাডাকির পর শিউলির চমক ভাঙ্গতো। তখন ওর আগের কথা কিছুই মনে করতে পারতো না।
শনিবার স্বামী কোলকাতায় কোন সাহিত্য সভায় গেলে মিনতির পোয়া বারো। মেয়েকে চটপট স্নান করিয়ে একটা নতুন ছাপা শাড়ি পরিয়ে দিলো। শিউলি মোটেও শাড়ি পরে না,বাবার এনে দেওয়া কোলকাতা থেকে নিত্যনতুন ড্রেস, ফ্রকেই সে অভ্যস্ত। মায়ের এই ব্যাবহারে একটু অবাকই হলো। মিনতি দেবীর সাফ কথা তোমার ভূত তাড়াতে পুজো হবে। ঠাকমা ঠিক লাঠিতে ভর দিয়ে ওঝা নিয়ে হাজির। ওঝা তো ঘরে পা দিয়ে নাক দিয়ে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলল এই ঘরে তেনাদের বাস রয়েছে। ওই মেয়ের ঘাড়ে কোন অপঘাতে মরা পেত্নীর বাস আছে। বলেই হাতের ঝাঁটটা বনবন করে ঘোরাতে লাগলো, চোখ থেকে যেন আগুন বের হচ্ছে। __ আয় ডাইনি! আয় পিশাচনী! দেখ তোর বাপের ও বাপ এসেছে, তোকে ঝেঁটিয়ে এই গৃহস্থের বাড়ি থেকে যদি না বার করতে পারি তাহলে আমার নাম ও জগাই ওঝা নয়। ভূত_ প্রেত, ব্রক্ষদৈত্য, মামদোর যম। ওঝা কি একটা ছেটাতেই সবার চোখ জ্বালা করতে লাগলো। শিউলি তো ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। ওর মা, ভাই সব ওকে উঠোনে ছেড়ে ঘরে দোর দিয়েছে। এমন সময় পীতাম্বরবাবুর প্রবেশ। লাইনে কি একটা গন্ডগোল হয়েছে বলে কোলকাতাগামী ট্রেনটা বাতিল হয়েছে, বিকেলের আগে কোন ট্রেন নেই। তিনি বাড়ির এই মূর্খতা আর অসভ্যতায় হতবাক হয়ে গেলেন। ওঝাকে বিদায় দেওয়ার জন্য ঠাকমা পাড়াগেঁয়ে অকথ্য ভাষায় শিউলিকে শাপশাপান্ত করতে করতে বিদায় নিলো। পীতম্বরবাবু একসপ্তাহ পরে এক বন্ধুর পরামর্শে মেয়েকে নিয়ে কোলকাতায় চলে গেলো। নামকরা সাইক্রিয়াটিকসের সাথে কনসাল্ট করে জানতে পারলো, এটা একটা স্লিপিং ডিসঅর্ডার। ডাক্তারি ভাষায় এর নাম প্যারাসমনিয়া। এটা সাধারণত গভীর ঘুম আর জাগার মধ্যবর্তী অবস্থায় ঘটে। এই সময় মানুষ ঘোরে হাঁটতে থাকে। তবে এই অবস্থা বেশিক্ষণ থাকে না, দশ মিনিট বা এক থেকে দেড় ঘন্টা।ওই মূহুর্তগুলোতে পেশেন্টকে খুব ট্যাকফুলি ট্যাকল করতে হয়। খুব আলতো বা মৃদু ভাবে ঠেলা দিয়ে জাগাতে হয়। ধারেকাছে কোন ধারালো অস্ত্র রাখা বিপদের কারন সে তখন নিজের বশে থাকে না। তবে ছেলেবেলায় ধরা পড়া এই রোগটা ঠিকমতো চিকিৎসা করালে সব ঠিক হয়ে যাবে। শিউলি বাবার সাথে কোলকাতায় গিয়ে কাউন্সিলং করাতো। হাল্কা আলোয় রোজ নিয়ম করে মেডিটেশন করতে বলেছিলো, সাথে কিছু ওষুধপত্র। ডাক্তারের কথায় দরজায় এলার্ম লাগানো হলো যাতে শিউলি ঘুমের ঘোরে আর অসতর্ক মুহূর্তে ঘর থেকে বেরোতে না পারে।

_ তুমি কি আমার সাথেই ডিনার করবে? বর্ণর ডাকে শিউলির চমক ভাঙলো।মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো। ব্যালকনিতে বসে শিউলি অতীতের সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিলো। দখিনের হাওয়া ওর কপাল চুল চুমু খেয়ে লুটোপুটি করছিলো। দূর থেকে ভেসে আসছিলো মিস্ত্রিদের ভোজপুরি ভাষায় হোলির গান। সামনেই দোল। আকাশে চাঁদ তার দেহসৌষ্ঠব বেশ বাড়াতে শুরু করেছে। শিউলিদের বাড়িটা বাইপাসের একধারে। এদিকটা একটু নিরালা, লোকজন কম। তবে আশেপাশে জলা বুজিয়ে প্রকান্ড প্রকান্ড হাইরাইজিং বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে।দুতিনবছরের মধ্যে সব গমগম করবে। দূর থেকে ওই বিল্ডিংগুলোকে একচক্ষু দৈত্যের মতো লাগছে, কারন মাঝে মাঝে ইঁটের ফাঁকে মিস্ত্রিরা আলো জ্বালিয়ে রান্না করছে। শিউলির খুব ইচ্ছে ছিলো ফ্ল্যাট নয়, বাড়িতে থাকবে। গ্রামে বড়ো বাড়িতে হাত পা মেলে থাকা তার অভ্যাস। একটু ফাঁকা ফাঁকা জায়গায়। তাই বর্ন বাইপাসের এই দিকটায় তুলনামূলক ভাবে একটু সস্তায় জমি পেয়ে দু’বছর হলো বাড়ি করে এখানে এসেছে কি হলো? খাওয়ার সার্ভ করবে না আমি করবো?
বর্নর কথায় শিউলি যেন যন্ত্রের মতো ডিশে রান্নার মাসির করে দেওয়া চিকেন আর পরোটা দিচ্ছিলো।
_ এনথিং রং শিউ! _ না, মাথাটা একটু ধরেছে। স্রাগটা ঠিক করতে করতে আড়চোখে বর্ণকে দেখে নিয়ে বললো_ তুমি আজ গাড়ি নিয়ে যাও প্লীজ। কিন্তু আমার তো টাইম দেওয়া আছে , গাড়ি একঘন্টা পরেই পিক করতে আসবে। শুধুমুধু পেট্রল পুড়িয়ে নিজের গাড়ি বার করতে যাবো কেন? বর্ণ একটা নামকরা বিদেশি কোম্পানীতে বড় পোষ্টে চাকরি করে। ওদের সময় অনুযায়ী দিন হলে ও এখানে রাতের বেলাতেই ওকে অফিস করতে হয়। অফিসের গাড়ি ওকে পিক করতে আসে। আগে অন্য কোম্পানিতে চাকরি করতো, একবছর হলো এখানে জয়েন করেছে।
_ গাড়িটা নিয়ে যাও প্লীজ ! শিউলি দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বললো। বর্ণ কি কিছু বুঝলো। হয়তো বুঝেই অফিসে ফোনটা করলো। শিউলি মাধ্যমিক দেবার পর ওর ওই প্যারাসমনিয়া চলে গিয়েছিলো। শিউলিকে পীতাম্বর বাবু বোর্ডিং এ রেখে পড়াশোনা করান। হোস্টেলে একদিন ওর স্লিপওয়াকিং হয়েছিলো। সেদিন ওর রুমমেট ছাড়া ব্যাপারটা কেও জানতো না। একদিন ব্যাস ! ওই একদিন বড়োবেলায় হয়েছিলো। ইয়ুনিভার্সিটিতে বর্ণর সাথে গভীর প্রেম তারপর বিয়ে। বর্ণকে ও নিজের অসুখের কথা বলেছে। ও পাত্তা দেয় নি। কি করে দেয়, বিয়ের চারবছর হতে চললো একদিন ও তো সেইরকম কিছু ঘটে নি। শিউলি সরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি করে, দশটা পাঁচটা। বর্ণর এই নতুন অফিসে জয়েন করার পর থেকেই ওকে একা থাকতে হয়। নিঃসঙ্গতা থেকেই কি এই রোগটা চাগাড় দিলো। গতপরশু বর্ন যাবার পর ওর স্পষ্ট মনে আছে দরজায় লক করে গল্পের বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছিলো। ঘুম ভাঙ্গলো নাইট শুটের পকেট থেকে মোবাইলের আওয়াজে। ঘোর ভাঙতেই ও দেখলো ওদের বাইপাশের রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে আছে। দৈত্যের মতো বড়ো বড়ো লরি ওর পাশ দিয়ে হুশহাশ করে যাচ্ছে। মোবাইল বেজেই যাচ্ছিলো। বর্ণর ফোন, ও জানে শিউলি রাতে ঠিকমতো ঘুমোতে পারে না। তাই মাঝে মাঝে সময় পেলে ফোন করে। শিউলি ও তাই পকেটে মোবাইল রেখে ঘুমিয়ে গেছিলো। মোবাইলের ঘড়িতে তখন রাত তিনটে। টলতে টলতে বাড়ি এসে দেখে দরজা হাট করে খোলা। ভাগ্যিস চোর ঢোকে নি, এদিকটা যা নিরবিলি। বর্ণ ও আর ফোন করে নি ভেবেছে ও ঘুমোচ্ছে। তাই তো ইচ্ছে করেই শিউলি বর্ণকে গাড়ি নিয়ে যেতে বললো। যদি ঘুমের ঘোরে গাড়ি ড্রাইভ করে কোন অঘটন ঘটায়। নতুন অতিথি আসছে পৃথিবীতে। _ আমি বেরোলাম, টেক কেয়ার ইয়োরসেল্ফ বলে শিউলিকে দীর্ঘ চুম্বন করে বর্ণ গাড়ির চাবি হাতে নিলো।
__ গাড়ি নিয়ে চললাম। ঘুমিয়ে পড়ো আর মিষ্টি মিষ্টি বেবীর স্বপ্ন দেখো। সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার আজ কনফারেন্স আছে।বলেই বর্ণ বেরিয়ে গেলো। শিউলি গতমাসে কনসিভ করেছে। বর্ণকে পরশুরাতের ঘটনাটা বলি বলি করে বললো না। শিউলি ড্রেস চেঞ্জ করে নাইটি পরলো, অনেকক্ষণ ধরে রাত প্রসাধন করলো। তারপর কি ভেবে মা বাবাকে ফোন লাগালো। হারু ওরফে হিরণ এখন ব্যাঙ্গালোরে, ওখানেই মা বাবাকে নিয়ে গেছে, গ্রামের বাড়ি এখন খাঁ খাঁ। আধঘন্টা গল্প করার পর একটা থ্রিলার মুভি দেখতে বসলো। মুভিটা ভীষন বোরিং, গল্পের গোরু গাছে উঠেছে। বন্ধ করে হাল্কা মিউজিক শুনতে লাগলো। শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেলো।

এই জায়গাটা আলো আঁধারির খেলা চলে। গাছপালা ও একটু বেশি। স্ট্রীট ল্যাম্পের আলো এখানে আবছা আসে। বড় বড় বোল্ডার রাখা আছে, লোহার রড ছড়ানো ছিটানো রয়েছে।
ওখানে গোঙানি শুনতে পাওয়া গেলো। বছর এগারো বারোর রুক্ষ কটা চুলের দুবিনুনির মেয়েটাকে চারটে লোক টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসছে। মেয়েটা বোধহয় মায়ের পাশে ফুটপাতে শুয়েছিলো। মদে চুর হয়ে যাওয়া জন্তুগুলো ওকে মুখে চাপা দিয়ে এখানে নিয়ে এসেছে। মেয়েটার ফ্রকের পিছনটা পুরো ছেঁড়া, সেফটিন দিয়ে আটকানো। সদ্য ওঠা বুকদুটো ডলতে ডলতে লোকগুলো খ্যাঁকখ্যাঁক করে হাসতে লাগলো। খড়ি ওঠা পা ধরে একজন টানতে যাবে হঠাৎ দেখে আবছা আলোয় খোলা চুল, সাদা নাইটি পরে কে যেন এগিয়ে আসছে। কে ওটা! ওপাশের জলার পেত্নী! ফিনকি দেওয়া চাঁদের আলোয় সাদা নাইটি পরা পেত্নীটা কেমন যেনো ঘোরের মধ্যে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে। ওরা পাঁজাকোলা করে ধরা মেয়েটাকে ফেলে পেছন দিকে দৌড় লাগালো।মেয়েটা ভয়ে চোখ বন্ধ করতে বাধ্য হলো। দূরে একটা রাতজাগা অদ্ভুতভাবে ডেকে উঠলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here