কবি—হামিদা আনজুমান এর এক অনন্য সুন্দর সৃষ্টি কবিতা “মায়া”

938
কবি—হামিদা আনজুমান এর এক অনন্য সুন্দর সৃষ্টি কবিতা গুচ্ছ “মায়া”
কবি—হামিদা আনজুমান

মায়া

           হামিদা আনজুমান

একেকটা পুরোদিন বড্ড বেশি মায়া নিয়ে ধরা দেয়
সকাল, দুপুর,রাত্রি মায়ার জালে বন্দী
দাদীর সুরমা আঁকা চোখের তীব্র মায়ার মতোন।

এই যে বৃষ্টির ছটায় কাঁপে অর্ধবৃত্তাকার চিরল বেতপাতার গাঁ,
কিংবা
তীর তথা রাস্তা পেরিয়ে বয়ে চলা নিকটবর্তী নদীটা
ভরা বর্ষার অথৈ জল বুকে ধরে
উচ্ছ্বাসে গড়িয়ে পড়ে একে অন্যের গায়ে
সেও যেন কেমন মন আচ্ছন্ন মায়া
মায়া নামের খেয়াল!

পরিক্রমার মগ্নতায়
অলকানন্দা ফোটার সময় হয়ে এলে
মৌগুলো হয় বিবাগী বাউল
বোধের দেয়ালে মেশে মায়া নামের মোহনবাঁশী
আঁকড়ে রাখার যোগ মিলানো
কিংবা বিনাশের বিয়োগে জড়ানো সন্ধিমেলায়
কান পাতলে শোনা যায় শতত আকুতির আহবান।

জরায়ুর উষ্ণতায় অস্তিত্বমাত্র
মায়া কথা বলে যায় জননীর কানে কানে
আগমনী সত্য জীবনের স্পর্শে জাগে স্পন্দনের আলোড়ন
এমনি করে পৃথিবী ভাঙ্গে, পৃথিবী গড়ে
সময়ের পথ রাঙে রঙধনুর নিবড়তম সিঞ্চনে।

জন্মমাত্র অধিকারের অভিমানে চিৎকার
খোঁজ করে মায়ার বন্দনা
যেন মায়ার বড় ক্ষুধা, বড় প্রয়োজন
শিকড়ের টেনে নেয়ার ক্ষমতায়
এখানে চাষ হয় হৃদয়ের গ্রন্থিবদ্ধ পরিস্ফুটনের
রুপ রস গন্ধ আনে মানবিক অবয়ব।
ভেসে চলা খেয়ালের ভেলায়
চোখ আর দৃষ্টির
স্রষ্টা আর সৃষ্টির মায়ায়
জড়াজড়ি করে অগুণতি মোহনা।

আর্য, সুমেরীয়, মিশরীয়, হরপ্পার সাথে মহেন্জোদারোর
সভ্যতার তাবৎ সব লিপিগুলো মায়ার নাটাইয়ে বাঁধা
বিবর্তনে আঁকা অভিলাষ থামিয়ে
পথের ডাকে আত্মহারা হয় পথিক
নিরন্তর মায়ার এক ফেরিওয়ালা হেঁটে চলে
অদৃশ্য কিন্তু কি বিপুল তার উপস্থিতি!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here