‘স্বপ্নকুমার’
রীতা ধর
কত রাত এমনও গেছে
সবার অলক্ষ্যে নোনাজলে ভাসতে ভাসতে
আমার দু’চোখ হয়ে গেছে অথৈ যমুনা
এই নিঃসাড় শরীর শুধু
পরে থাকে অবচেতন হয়ে
আর অথৈ যমুনায় পানসী হয়ে ভেসে থাকি আমি সারারাত।
নীলবৈঠাখানি হাতে নিয়ে অপেক্ষায়
থাকি আমার স্বপ্নকুমারের
তুমি একবার,শুধু একবার যখন
তোমার চরণ মেলে রাখ আমার
অপেক্ষমাণ স্বপ্নের পানসীতে
আমি তোমায় নিয়ে ভেসে যাই
কোন অতলান্ত গহীন সমুদ্রে
মিশে থাকি তোমার মনে ও শরীরের স্পর্শে
হৃদয়ভরা ভালোবাসা দিয়ে যখন আমায় সাজিয়ে দাও নিশীথের মহুয়া রঙে
বুকের ভিতর এক সুখের পায়রা
তখন ডানা মেলে উড়তে থাকে
এমনি সুন্দর স্বপ্নিল মধুরিমার হাত ধরে
কেটে যায় আমার রাতের প্রহর।
ভোর হয়,সূর্যের আলোর সাথে সাথে
শিশির বিন্দুর মত মিলিয়ে যায়
আমার আকাংঙ্খার স্বপ্নকুমার
গভীর শূন্যতায় বাড়তে থাকে
আমার ব্যাথার পাহাড়।
একটু একটু করে ভাঙতে থাকে
ভালোবাসার বিশ্বাস
আমি হারিয়ে ফেলি আমার ভালোবাসার পানসী,হারিয়ে ফেলি সুখের স্বপ্নবাসর,
এখন কোন জাগতিক ভালোবাসা
আর আমাকে ছুঁতে পারেনা
স্বপ্নভাঙ্গার বেদনায় আমার হৃদয়
আর বিচুর্ণ হয়না
দিনের আলোর ঝলমলে চাকচিক্যে
আমি আর বিমোহিত হইনা
ঘোর অমানিশার মত প্রতিরাতে আমি একটু একটু করে বিসর্জিতা হই জীবন থেকে
ঘনিষ্ঠ হই শ্মশানঘাটের চন্দনসুবাসের সাথে
সব হারিয়ে নিঃস্ব আমি আজ অন্য একরকম বিশুদ্ধ জীবন যাপন করছি।
আমার নিঃসাড় শরীর নিটোল পাহাড় হয়ে অসীম মমতায় বুকে লালন করছে
বেদনার অসংখ্য গাছপালা
আমি বেশ ভালো আছি
বেশ সুখে আছি স্বপ্নকুমার।