পরিযায়ীর ইস্তাহার
—————————————–
অ ল ক জা না
।।এক।।
সময় চলে যাওয়ার পর পড়ে থাকে
কিছু শব্দ।
মাইল ফলকের ওপর লিখে রাখা
সংখ্যা তত্ত্বে, পথিক পড়ে নেয় গন্তব্যের দূরত্ব।
পায়ে জড়ানো ক্লান্তি ঘাম একমাত্র সঙ্গী,
কেউ শোনে না বুকফালা আর্তির দহন
হয়তো তাই কিছু ক্রন্দন ধ্বনি
আকাশের ধ্রুবতারা হয়ে যায়।
।।দুই।।
গনগনে দুপুরের ভেতর
কারা যেন কিছু ছায়া চেয়ে
মেখে নেয় পথের ধুলো,
না ফেরা ঘরদুয়ার পড়েই থাকে !
সভ্যতার সৌখিন পিচে গলতে থাকে
আপাদমস্তক, পোড়া স্তন মুখে
শিশুটিও চিরতরে এই প্রথম শান্ত সুবোধ।
পথে পড়ে থাকে শতেক মৃত ভাস্কর্য
এ শতক জানিয়ে যায় —-
শ্মশান নামে কোন আলাদা ভূমি
পৃথিবীতে আর হয় না।
।।তিন।।
রুটিতে লেগেই থাকল ধাতব চাকার আদর
রক্ত-লালা ও দীর্ঘশ্বাস।
দায় এড়াতে উড়ো মেঘবৃষ্টির সাফাই
হটাৎই আকাশের উদারতা
আজকাল বড়োবেশি ভাবিয়ে তোলে
সংগীতে বাজে শোক শূন্যতার দহন
পরিযায়ী সময় হারিয়ে ফেলে
গন্তব্যের ঠিকানা।
।।চার।।
কাব্যের চাঁদ অশ্রুতে স্নান সেরে নেয় !
আর রাজস্বীকৃত বুদ্ধিব্যাপারী
মুখে কুলুপ এঁটে লিখে চলেন
ঐতিহ্যের রাজকাহিনী,
এসব কথা তারকাঁটার সমান
পাখিরা বাতাসের উষ্ণতায়
বুঝতে পারে পৃথিবীর কোন্ মাটি
সর্বাধিক ফসলের যোগ্য।
।।পাঁচ।।
আগুন ধরা পায়ে নেমে আসে
চোখের জল,
সেও ফুরিয়ে আসে এক সময়
তখন সমস্ত ঘরমুখো যাত্রী জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড
ছুটে আসছে আমাদের দিকে
পুড়বে, পুড়িয়ে দেবেই অমানবিক মুখ ও মুখোশ।
।।ছয়।।
প্রথম মাতৃত্বকে বরণ করে নেয় পথ
প্রথম সঙ্গমের জন্য হাওয়া-জ্যোৎস্নার
বাসর সাজিয়ে দেয় পথ
গাছে গাছে আনন্দমুখর
নেমে আসে পুষ্প বৃষ্টির শুভেচ্ছা।
এই প্রেমে ভাইরাস হেরে যায়
এই শিশু ভাইরাসজয়ী
নিরাময় সকাল হোক।
।।সাত।।
অবিশ্রাম ঢেউয়ের পায়ে পায়ে
মুছে যায় গাঁদেশের সীমা
রাতের খোঁয়াড়ে বাঁধা পড়ে থাকে
সমগ্র দিনের আলো
সমব্যথী শব্দ হারিয়ে যায়
লুঠ ধর্ষণের ওপর করোনার কোন
নিষেধাজ্ঞা নেই।
সবই বাড়ন্ত, জীবন যৌবন ও মূল্যবোধ।
।।আট।।
যদি ঘরে ফেরা হয়
যদি ঘরের ভাত বরাদ্দ থাকে ?
রাজা ও রাজমাতা শুনে রাখো :
বেঁচে ফেরা পরিযায়ী হাত পা
সাধের আসন কেড়ে নেবে।