“ছায়া শরীরের মানুষগুলি” একটি দীর্ঘ কবিতাটি লিখেছেন ওপার বাংলার কলমযোদ্ধা- নিমাই জানা

477
“ছায়া শরীরের মানুষগুলি” একটি দীর্ঘ কবিতাটি লিখেছেন ওপার বাংলার কলমযোদ্ধা- নিমাই জানা

ছায়া শরীরের মানুষগুলি

নিমাই জানা

সূর্য ডুবলেই অনেকে নদী হয়ে গেছে
প্রতিটি পাতা থেকে কুয়াশা কেমন শিশির বিন্দু হতে হতে নিয়ে গেছে নক্ষত্রের কাছে
নক্ষত্র বড় বর্ণময় । দুহাতে তার পরিচিত সবুজ ধানের শীষ হাঁটু বেয়ে নেমে গেছে মেঠো পথে,
এখানে বড় দারিদ্রতার আলো , সংসার জ্বলে ওঠে প্রতিটি সন্ধ্যা বেলায়
বৃষ্টি হলেই অপরূপ দৃশ্য দুই দিকে ,
দুটি পা শুয়ে আছে বৃষ্টির ফোঁটায় ।আগুন নামক পাতার রোদে সকলে ভিজিয়ে গেছে আমার শরীরের পিত্তরস ।
চোখে আলু ভাতের স্বপ্ন দেখছে শিশু , কালো পেট পুড়ে যাচ্ছে জ্বলন্ত আংরায় ।
শুকতারাই কেবল রামায়ণ পড়ে নিচ্ছে ।

দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অদৃশ্য রাধার গায়ে হলুদ মাখিয়ে দিচ্ছি এখন ।
এরা কেউ আমার সাথে স্নান করেনি বলে
নদীতে ভিজে পরকীয়ার কথাই বলে গেছে আজন্মকাল । সংক্রমনের কথা ভাবতেই গোটা শরীরে কেমন নোনামাটি ছড়িয়ে গেল ।
বিন্যাস নিয়ে অনেক কিছুই ঘটে গেছে ঈশ্বরচিন্তায় ।
যারা গ্রামে হকারী ছেড়ে এই বাড়ি ফিরল তাদের গায়ে ও এখন সাদা জামা ।
গায়ের ছাল গুলো থেকে হাড় মাংস আলাদা , তাদের জন্য কেবল উর্বর মাটি হয়ে গেছি ফসল চিন্তায় ।
লাউ ডগার মত তাদেরও সম্পর্ক ছিন্ন হয়
ঘুমের ওষুধেই ।
রাতে অদৃশ্য মানুষেরা পাগলামী ভুলে যায় ।

বাসুদেবের কথা বড় মনে হলো আজ
মহাভারত নামক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অনেকগুলো নদী পেরোতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছে প্রতিবন্ধী ভাতায় । শিউলিপুর থেকে উদয়পুর হাঁটতে হাঁটতে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কালো জলে
কত পথ চলে গেছে চাঁদ অথবা তারার নিচে তাই কৃষ্ণের অস্ত্র ধরার কথা ছিল কুরুক্ষেত্রের মাঠে , অর্জুন বড় অপরাধী
সে কেবল অনেকগুলো মৃত্যুকে দেখেছে চন্দন গাছের মতো
মহাপ্রস্থানের কোন দ্রাঘিমাংশ নেই

মেহগিনি পাতার ডিফিকাল্টিজ গুলো কেবল একা অদৃশ্য রাত ই জানে । ফ্রিকোয়েন্সির ছেঁড়া ছেঁড়া পাতায় সবুজ কালো অন্ধকার বিছানা পেতে শুয়ে আছে ,
তার নিচে বাবলা পাতার অদৃশ্য মৃত্যুগুলো শববাহী গাড়িটিতে ঘুমিয়ে পড়ে।
একাকী সুভাষ তারার সাথে ক্রমশ সরে যায় তাদের গতিপথ থেকে।
পোস্টমর্টেম ঘরে বিষাক্ত চুরি অনেক গুলো সবুজ পাতার চোখের জল হয়ে ঝরে গেছে
সন্দীপের ডোরা জামার পিছনে ,
আত্মারা ফিরে আসে নিজের ঘরে ।

গর্ভ জাতের হৃদস্পন্দন মেপে নিচ্ছে কেউ
পাপড়ি ফুলের অস্বাভাবিক দিনগুলো যেন
ফিরে না আসে । শিশুরা এখন নীরবে খেলে যাচ্ছে বরফকুচি উপর , দুহাতে তাদের গ্রানাইট
আলপথের দোটানা নাভিমূলে ভাঁজ করা শাড়ি থেকে যে ফুলগুলো ঝরে পড়ছে ,তার ওপর তুলসী পাতার ইমারত। পুড়ে যাচ্ছে কেউ আগুনের পাশে,
দহন শক্তি বড় একাকার ভষ্মীভূত নিজের ছায়া
আমি কেবল দুহাতে একটা বড় গহ্বর খুঁজছি অসময়ের কালো পাখি ডেকে যাচ্ছে নীরব বর্ষায়
এখনো কেন আমার জন্ম হচ্ছে না ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here