ক্ষুধার লড়াই
সুমিতা বর্ধন
কলিংবেলের শব্দে দরজা খুলতেই
ঝকঝকে ছেলেটি হাসিমুখে-
“আমি কুচিনা চিমনি কোম্পানি থেকে’-
একটু যদি শোনেন বিষয়টা।
আমি ছোট্ট করে হেসে
না সূচক বাক্যটি জানিয়ে দিই।
সকাল বেলায় ভিনদেশী ফেরিওয়ালা –
গালিচা কিংবা মেট্রেস নিয়ে হাঁক পাড়ে,
কারো ভেন রিকশায় আবার জোরে মাইকিং-
চুল দিয়ে বাসন।
জোড়ে হেঁকে যায় পুরনো কাগজ ওয়ালা ,
ভাঙাচোরা লোহার জিনিষ বিক্রি,
শাড়ি, জামা ,মশারী দিয়ে স্টিলের বাসন।
বড় রাস্তায় ছোট ছোট গাড়িতে
লাল,কালো, সবুজের সমাহার-
বাবুদের জন্য হরেক রকম
ফল।
রাস্তায় বেরোতেই চারিদিকে বাইক, স্কুটার,গাড়ি আর মানুষ ছুটছে,
ঐদিকে দেখা যায় ছোট্ট বাচ্চা কোলে ভিখিরিটা হাত পাতে,
থালা বাসন মাজার লোকেরা
সকাল থেকেই ছুটছে এবাড়ি-ওবাড়ি।
বাসে-ট্রামে গাদা গাদা ভিড়।
চলছে মানুষ গন্তব্যে,
হাঁটতে হাঁটতে দেখি মোড়ের মাথায়
কতক মানুষের জটলা থুড়ি ধরনা,
না পাওয়ার কষ্টে ভর্তি জীবন
আজ অনশনে বসেছে ।
দূরে ঐ মাইকের কানফাটা চিৎকার-
আগামী ২৪ তারিখ বুধবার
হাজারো প্রতিবাদে ২৪ ঘন্টা ভারত বন্ধ ।
তারপরেও দুমুঠো খাবারের জন্য
হাজার মাইল পারি দেয় পরিযায়ী শ্রমিক।
চলছে আরো কতো সংগ্রাম।
সকাল থেকে রাত-
শুধু লড়াই আর লড়াই
গদির লড়াই, ক্ষমতার লড়াই এর পেছনে
ঢাকা পড়ে ক্ষুধার লড়াই।
এ যে তোমার লড়াই, আমার লড়াই
এ যে জীবনের লড়াই।
এ লড়াই পোড়া পেটের লড়াই।