রুটি
লাভলী ইসলাম
এই উঠো উঠোনা
আর কত ঘুমাবে বল ?
কেনো কি হয়েছে ডাকছো কেনো ?
উঠে চল আমার সাথে
লক ডাউনে কোথায় যাবো ?
রান্নাঘরে লক ডাউন নেই ।
মা মা মানে ?
মানে মানে করছো কেনো
আজকে তুমি রুটি বানাবে ।
কি– কি — কি বলছো এ সব ?
কি বলেছি শোননি ?
চলো উঠো বলেই মৌমিতা অনিকের হাত ধরে টেনে উঠালো ।
অনিক মৌমিতার পেছনে পেছনে রান্না ঘরে গিয়ে
আটা বেলুন পিড়ি সব রেডি দেখে চোখ কপালে তুলে
হায় আল্লাহ্ একি দেখছি ?
এটা তো সম্ভব না । তুমি কি আমাকে সত্যি সত্যি রুটি বানাতে বলছো ?
হেঁ সত্যি সত্যি ঠিকই দেখছো এবং বানাতে ও বলছি ।
আজ তুমিই রুটি বানাবে ।
আমি তো বানাতে পারিনা মৌ ।
বানালেই পারবে আমিও আগে কখনোই বানাইনি অনি ।
তবুও তোমাকে বানিয়ে নিত্যদিন খাওয়াই ।
তুমি রুটি বানাবে আর আমি ভাজি করবো আজকে
আমরা কাছাকাছি থাকবো ।
অগ্যতা বেচারা পেঁচার মত চেহারা করে রুটি বানাচ্ছে সর্বশক্তি দিয়ে
কোনটা ত্রিভুজ ,কোনটা চতুর্ভুজ, কোনটা লম্বা আবার কোনটা টেরা বাঁকা ।
মৌমিতা আড়চোখে চেয়ে দেখে দেখে মুখ টিপে হাসে আর লুকিয়ে আঁচলে মুখ ঢাকে ।
বাহ্ বেশ
ভালই তো বানাচ্ছো অনি।
কাল থেকে প্রতিদিন সকালে তুমি রুটি বানাবা ।
আমি সব কাজই করব তা তো হয় না । তাই না ?
বিয়ের আগে বলতে সব সময় কাছে কাছে থাকবে কখনো দূরত্ব সৃষ্টি করবে না ।
সব সময় অফিস নিয়ে ব্যস্ত থাক কিছু বলি না । এখন তো অফিস নেই
লক ডাউনে পড়ে পড়ে কেবল ঘুমাও আর ঘুমাও ।
আমিও তো অফিস ছেড়ে লক ডাউনে ঘরবন্দি নাকি ?
হ্যাঁ তা তো ঠিকই দুজনেই লক ডাউনে আছি ।
তো আমি কি তোমার কাজের বুয়া ?
আর তুমি কি আমার মনিব সাহেব ?
আরে না না তা হবে কেনো
ছিঃ এ সব কি বলছো তুমি মৌ?
হা — হা— হাঁ– চ্ছো —-
খুন্তি ফেলে মৌমিতা অনিকের হাত থেকে বেলুন নিয়ে
কি হলো তোমার হাঁচি দিচ্ছো কেনো ?
না মানে গত রাত থেকে শরীরটা ভাল লাগছে না
জ্বর সর্দি হতে পারে মনে হয় !!!
ওহ্ আচ্ছা বুঝেছি
আচ্ছা ঠিক আছে
যাও ঘরে গিয়ে শুয়ে থাক ।
অনিক ঘরে এসে পা দিয়ে
যা বাবা এ যাত্রায় বাঁচলাম রুটির ম্যাডামের হাত থেকে ।
মৌমিতা পেছন থেকে ঘুরে সামনে এসে
হুমমম ঘটনাটা আমি আগেই পরিষ্কার বুঝেছিলাম ।