করোনা ক্রান্তি কালের বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা “প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম”লিখেছেন কলমযোদ্ধা হামিদা আনজুমান

764
“প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম”লিখেছেন কলমযোদ্ধা হামিদা আনজুমান

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম

                                                                হামিদা আনজুমান

বিশ্বব্যাপী নভেল করোনা ভাইরাসের থাবা মারাত্মক হয়ে উঠেছে।আমরা জানি যে কোন রোগ হলে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ই উত্তম।এই লকডাউনের সময়টাতে কিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বা সাবধান থাকতে হবে সে বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়া, ইন্টারনেট, ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা নানান তথ্য জানছি, মেনে চলছি।মেনে চলা আবশ্যক।

আমি তথ্যগুলো সমন্বয় করে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করছি।
বাঁচতে হলে জানতে এবং মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধিতে যা যা আছে। এই সময়ে রক্ষা করে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব।চলুন আমরা করণীয়গুলো দেখে নেই…

  স্বাভাবিক স্বাস্থ্যবিধি সমূহ মানা….
১. যেখানে সেখানে কফ, থুথু না ফেলা।
২. কোনকিছু ধরার আগে বা বাইরে থেকে ফিরলে কমপক্ষে কুড়ি সেকেন্ড সাবান পানিতে হাত ধৌত করা।পানি না পেলে অ্যালকোহল যুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করা।
৩. হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় নাক, মুখ ঢেকে নেয়া।
৪.অযথা চোখে, নাকে, মুখে আঙ্গুল দেয়া পরিহার করা।
৪.কিছু অভ্যাস ত্যাগ করা, যেমন-মুখে আঙুল দেয়া, কলমের মুখ কামড়ানো, আঙুল জিহ্বায় লাগিয়ে কাগজ উল্টানো, থুথু দিয়ে টাকা গোনা ইত্যাদি।
৫.ধূমপান যথাসম্ভব পরিহার করা।

   আইসোলেশনে থাকা অবস্থায়….
সাসপেক্টেড কোভিড-19 পজিটিভ /করোনাক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গেলে /হাসপাতালে কর্তব্য পালন করে থাকলে/ বিদেশ ফেরত হলে,
কমপক্ষে চৌদ্দ দিন আইসোলেশনে থাকা বা পরিবারের অন্যদের থেকে দূরত্ব মেনটেইন করা উচিত।সেক্ষেত্রে একটি কক্ষে আলাদা অবস্থান নিশ্চিত করা জরুরী।এই সময় তিনি ঘর থেকে বের হবেন না।তবে যা খেয়াল রাখতে হবে তা হলো ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলো, বাতাস এর ব্যবস্থা থাকে।তাকে পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে যেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

বাইরে গেলে বা বাহির থেকে ফিরলে….
১.প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময় পরিষ্কার মাস্ক পড়া।ধুলোবালি এবং জনসমাগম যেখানে বেশি সে স্থান এড়িয়ে চলা।
২.অন্যের থেকে এক মিটার বা তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখা।
২. বাইরে থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেয়া জরুরী।গোসল করে নিতে হবে। পরিধেয় কাপড়গুলো সাবান পানি বা পাউডার দিয়ে আধঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ধুয়ে নিতে হবে।
৩. বাইরে পড়া জুতা ঘরের ভেতরে না নেয়া।

   বাইরে থেকে বাজার বা কিছু আনলে…
১.বাজার থেকে কোন কাঁচা সবজি বা ফল আনলে আলাদা করে ১২-২৪ ঘন্টা রেখে দিতে পারলে ভালো।তারপর ধুয়ে, শুকিয়ে ফ্রিজে রাখা ভালো হয়।সাথে সাথে ব্যবহার করতে হলে লবন মিশ্রিত পানিতে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে নেয়া যায়।
২. প্যাকেটজাত কিছু আনলে ভালো করে প্যাকেট টি পরিষ্কার করে নিতে হবে।

   এ সময়ে যেসব খাবার উপকারী ….
১.সুষম খাবার খেতে হবে।
২.প্রচুর পানি খেতে হবে
৩.এন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে। তাজা শাক সবজি ফলমুল খেতে হবে।
৪.ভিটামিন সি বা টক ফল, যেমন কমলা, লেবু খেতে হবে। এছাড়াও সিজনাল ফল খাওয়া দরকার।
৫.আদা,লবঙ্গ এগুলো খুব ভালো স্বাস্থ্যের জন্য।পনিতে দিয়ে ফুটিয়ে হালকা গরম অবস্থায় খাওয়া যেতে পারে।
৬.কালিজিরা কার্যকরী একটা জিনিস। প্রতিদিন সকাল বেলা উঠে এক চামচ মধুর সাথে কালিজিরা অনেক বেটার একটা কম্বিনেশন। এছাড়া কালিজিরা ভর্তা করে বা এমনি ও খাওয়া যেতে পারে।

  স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপনে ইমিউনিটি ধরে রাখা….
১.নিয়ম মাফিক ঘুমাতে হবে, রাতে না জেগে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
২.প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে, প্রায় ১৫-৩০ মিনিট। এতে মাসল এক্টিভিটি বাড়বে।
৩. কিছু সময়ের জন্য রোদে বা খোলা হাওয়ায় হাটাহাটি করলে ভালো হয়।
৪.এ সময়ে শরীরে সঠিক হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখা খুব জরুরি। তাই মন কে শান্ত রাখতে হবে, হাসি খুশি থাকতে হবে।

সবাই ভাল থাকুন, সবাই সুস্থ থাকুন।আল্লাহ সবাই কে হেফাজত করুন।

হামিদা আনজুমান
লেখক, কবি,ছড়াকার
সহকারী অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ
নরসিংদী সরকারি কলেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here