ভারত থেকে সমাজ-সভ্যতার সাম্য দর্শনের লেখিকা-কমলিকা দত্ত’র ভাষাদিবস এর বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা “আমি বনাম আমি”

338
কমলিকা দত্ত’র ভাষাদিবস এর বিশ্লেষণ ধর্মী লেখা “আমি বনাম আমি”

আমি বনাম আমি
কমলিকা দত্ত

সেই যে লোকটি যিনি আমায় ধম্মোতলায় নিমন্ত্রণ করেছিলেন, উপহার স্বরূপ আমাকে চয়েস দিলেন –‘গোরু’ না ‘গরু’
আমি আইডেন্টিফায়েড মধ্যবিত্ত। সুতরাং ‘গ’ বা ‘র’ কিংবা তাদের গায়ে কি গয়না পরানো হলো তাতে আগ্রহী নই। আমার আগ্রহ সে দুধ দেয় কি দেয় না?
মাংস ইত্যাদির প্রশ্নে আমি যাব না। সেখানে বিতর্ক নিরীহ নয়। তাছাড়া আমি ইদ বা ঈদ কোনোটাই পালন করিনা।কিন্তু মধ্যবিত্তের একটা স্ট্রাগল আছে। স্ট্রাগলের পেছনে কিঞ্চিৎ পুঁথিগত শিক্ষা ও সেই সূত্রে একটি সীমিত যুক্তিবোধ। সুতরাং মনে মনে ভাবলাম গোরু নিলে না আবার নদী র জায়গায় নোদীতে ডুবতে হয়। সে কি রকম ব্যাপার চেখেও দেখা হয়নি।
তবে, সে না হয় পরে ভাবা যাবে। আপাতত অপশন ওয়ান না টু? এদিকে “গো” শব্দের ব্যবহার ব্যাপকভাবে প্রচলিত। প্রচলিতের দিকে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা গরু বা গোরুর না থাকলেও আমার আছে। কিন্তু গোরু নিলে সে কি দুধ দেবে? সেই দুধ বেচে… নাকি উল্টে তাকেই দুধের যোগান দিতে হবে। বিভ্রান্তিকর।
এক্ষেত্রে কোন্ ঠাকুরের শরণাপন্ন হবো? একজনকে তো ডাকলেও সাড়া দেয় না। আর একজনের তো নোবেলটাই চুরি গেছে। তারপর কি আর সাহায্যের হাত পাতা যায়। আর যাই হোক ‘ লোকে কি বলবে!’ বোধটা আছে।
মধ্যবিত্ত মানেই ব্যালেন্স। প্রাচীনকাল থেকে তার এ বিষয়ে সুনাম। দু’দিকেই যদি হাঁটি! কিন্তু লোকটির শর্ত, একটিই চয়েস দেবে। তবে, আমিও মধ্যপন্থা গুলে খেয়ে বড় হয়েছি ভাই। সাত পাঁচ ভেবে বললাম
” দাদা আমার এসব কিচ্ছু চাই না। আপনি বলেছেন এই অনেক। আমি কেবলমাত্র আপনাকেই চাই।
সাধারণ মানুষ নিমন্ত্রণেই খুশি। আপনি বরং সবাইকে দিন। আমি কি আর আপনার অতিথি! আমি তো আপনার চেয়েও আপন।।”
সেই থেকে ভদ্রলোক আর আমি ভীষণ রকম আন্তরিক হয়ে পড়েছি।৷

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here