তরুণ কবি হাসনাত শুভ্র’র সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকের লিখা ভ্রমণ কাব্য “জ্যাম হোল অলংকার”

437
কবিতা-জ্যাম-হোল-অলংকার-কবি-হাসনাত-শুভ্র-doinik-alap

জ্যাম হোল অলংকার

– হাসনাত শুভ্র

দিবসটি যা গত হয়ে পর,তাহা ছিল সোমবার।
দীর্ঘ সাতদিন, নিজেকে রেখেছিলাম বন্দিগৃহ। শরীর মন দুটো দপ্তরেই অন্তদহ,
বহির্বিশ্ব থেকে নিরাপদে থাকার সুরাহ।
কিন্তু কালছিল মহাকাজ, যেতে হবে পল্টন।
যেখানের নাম শুনলেও আসে জ্বর কম্পন।
কিছু নাহি করিবার, কাজ যে মস্ত ব্যাপার।

সকাল সকাল যাত্রা, শেষে দুপুর পর্যন্ত মাত্রা।
হলও তাই, এবার ফিরব কোন পথে,
ভেবে চিন্তে নাহি পাই।
রাস্তা তার জায়গায় আছে,
উপরে তার বাস আছে,
হাটার জায়গা একটু নাই।
একি হাল, ঘটনা কি?? কেন এমন বেতাল।
ঘন্টা খানিক ঘুরে ফিরে বুঝলাম তাল,
এক রাজনৈতিক দলের সমাবেশ বিশাল।

আশেপাশের অলিগলি, কিশোর বালকদের কিলিবিলি। হয়ত প্রথম এসেছে ঢাকায়,
রাজনীতি করবে বড়নেতা বনবে,
বয়সে কি এসেযায়,এখন বালক কাল যুবক হবে,
ঢাকা শহর দেখে নিবে, গ্রামের বসবাস ভুলে যাবে। চলুক, রাজনীতির ধারা অব্যাহত থাকুক।

বালকদের থেকে নিরাপত্তার তরে,
বাসে উঠে বসলাম পরে,
রাস্তায় পা রাখার জায়গা না ধরে।
ঘন্টা পেরোলো, চারটা বেজে
পাঁচটা হয়ে গেলো, পাঁচহাত মাত্র এগুলো।
উপায় নেই সমাবেশ বলে কথা,
দীর্ঘ আধাযুগ পর গুহা থেকে রাস্তায় তথা,
ভদ্রতায় সমস্যা নেই তবে চাকায় যে গতি নেই,
কি করা যাবে ভরসা নিজ পা’ই।

শুরু হল হন্টন, প্রথমে পল্টন।
বেজে ঘড়ি পঞ্চম।
রমনা পার্ক প্রবেশ করিয়া,
লেকের ধারের রাস্তা ধরিয়া,
শাহবাগ পড়িলাম আসিয়া।
সেখানে আরেক কান্ড লক্ষ্য করি,
রাস্তা আছে ফাঁকা পরি,
নারী-পুরুষ ভরি ভরি।
সমাধান কি করি। আছে পা, নিজ পা।
থামলনা হন্টন, পার হলাম কাঁটাবন,
বাটা যখন যায়, ফুটের উপর দুহাত চওড়া করে,
কোন এক যুবক চেনা বড় দায়।

ওমা একি, বাল্য বন্ধু গালিব নাকি।
ডাক্তার মস্ত এখন সরকারি চাকুরে,
মাসও পেরোইনি বউ তার ঘরেরে।
আহ কি শান্তি বাল্যবন্ধুর মুখ,
কিন্তু তেষ্টায় ফেটে যাচ্ছে এক ছাতি বুক।
খুজে খুজে হয়রান হাতিরপুল,
এলিফ্যান্টেও মিলেনা একগ্লাস ফলমুল।
সময় চলে যায় দেখতে দেখতে সন্ধ্যা এসেযায়।
বিদায় হল বন্ধু দুজনের সেও কিন্তু লেখে,
প্রতি বছর বই মেলায় তাও আবার ছাপে।
রাস্তায় যে নেই ফাঁক, আবার রাস্তা মাপা যাক।

সিটি কলেজ যায়, জিগাতলা আয়।
এবার যদি মিলে কিছু, আশা নিরাশায়।
বাসের দেখা মেলে, সেথায় বসার যায়গা নাই, খালি বাস থামে কোথায়, মোর যে জানা নাই।
রিক্সা আছে গুটি’কয়েক,
ভাড়া কষছে গুন’কয়েক।
উপায় কি করি, আমি বাসেই উঠে পরি।
স্টান্ডে নেমে ঘড়ি দেখে অবাক,
সাতটা বেজে এক। মিটিং আছে শিয়ার মোড়ে, হন্তদন্ত পায়, আমার কি হবে উপায়।

দেখিলাম হিসাব কষিয়া দু’ঘন্টা ব্যয়, মতিঝিল থেকে শিয়া মসজিদ হেটে আসা যায়।

“সারা শরীর যাচাই হইল, আত্মগৌরব বলীয়ান।”
রাজনীতির প্যাচে পড়ে, দেখা হল কর্মক্ষম।
“আমি বেঁচে আছি এই ঢাকার শহর,
জ্যাম হোল তার অলংকার।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here