পরিত্যক্ত ডাকঘর
আইরীন কাকলী
পরিত্যক্ত ডাকঘর থেকে বেরিয়ে আসে
কতগুলো গল্পের বদ্ধ আত্মার অস্তিত্ব।
এক সম্মোহনী স্তরে পৌঁছাতে চেয়ে তারা
অন্ধকার পান করে ময়ায় মাতাল হলেও
ডাকঘরের চৌকাঠ মাড়াতে পারলো না।
অদ্ভুত যাদু ঘোরে বন্দী হয়ে তারা
ঘুঁনে ধরা টেবিলে,
ধূলি পরা জানালার কাঁচে,
কালিহীন কলমের রুক্ষতায়,
মরিচা ধরা ভাঙাচোরা বাক্সের কোটরে,
জীর্ণ ডাকটিকেট এর সাথে
সখ্যতার মাধ্যমে নতুন স্মৃতির জাদুঘর সাজায়।
অজস্র হলুদ খাম বিবর্ণতায় এলোমেলো
বিশৃঙ্খলতার সাথে পার করছে
তাদের কফিন জীবনের ভয়াবহ সময়।
খামের সাথে গল্পের ক্ষণিকের সম্পর্ক
এখনো পর্যন্ত গ্রীক ট্রাজেডির শ্রেষ্ঠত্ব
নিয়ে বয়ে চলছে আমাদের সময়ের পথে।
গল্পগুলো সুখের
গল্প গুলো হারানোর
গল্পগুলো স্বপ্নের
গল্পগুলো বেদনা অথবা বিচ্ছেদের,
গল্পগুলো গড়ার প্রত্যাশা নিয়ে
খামে বন্দী
গল্পগুলো সাজানো
গল্পগুলো মান অভিমান আর ক্ষোভের।
সর্বোপরি গল্পগুলো প্রেমের
ঘৃণার অথবা
গল্পগুলো ভালবাসার নানা রঙ।
অন্ধকার ডাকঘর থেকে
বেরিয়ে আসতে চায়
তারা শহরের, গাঁয়ের,
মফস্বলের আকাশে।
তবু পারে না,
এক অদ্ভুত সম্মোহনী শক্তির উপাসনা
ক্রমেই তাদের পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ
অন্ধকার কফিনেই যেন বন্দি রাখে আজীবন।