” এক একদিন কবিতার সামনে “
।। গোলাম কবির ।।
এক একদিন কবিতার সামনে
দাঁড়িয়ে যাই নিজের দৈন্যতা নিয়ে,
বিমুগ্ধ চোখের অপলক দৃষ্টি মেলে
বিপুল বিষ্ময়ে চেয়ে থাকি তার দিকে,
দু’চোখে শ্রাবণের ঘন ঘোর বর্ষা
নামিয়ে দিয়ে এ শহরটাকে ভাসিয়ে
দেই প্রবল বন্যায়!
এক একদিন কবিতার সামনে হাঁটু গেড়ে
বসে থাকি সামান্য শব্দ ভিক্ষা করতে,
ভুলে যাই প্রেমিকার প্রতি আমার
যত অভিমান, অভিযোগ আর
অবহেলায় ক্ষয় হতে থাকা হৃদয়ের
সুতীব্র ব্যথায় অনুভবের উদাসী বাউল
মেঘের ঘনঘটায় হারিয়ে যাওয়া
দিনান্তের সূর্যকে ঢেকে ফেলে!
এক একদিন কবিতাকে দেখে
দৌড়ে পালিয়ে যাই ওর আয়নায়
নিজের কষ্ট গুলো বেহায়ার মতো
বলে ফেলি যদি এই ভয়ে
কিংবা বলা যায় আমার কষ্ট গুলো
হয়তো কখনো হঠাৎ করেই
কবিতার শরীরে একজন কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত
মানুষের দগদগে ক্ষতের মতো
উঠে আসার ভয়ে পালিয়ে আসি
কবিতার সামনে থেকে
একদমই চোরের মতো!
এক একদিন কবিতার সামনে বসে
থেকে রিমান্ডে নেয়া একজন
আসামীর মতো গড়গড় করে
ভালোবাসা না পাওয়ায় নিজের সব
কষ্টের কথা বলে দিই একটুখানি
হালকা হবার আশার ছলনায়!
এক একদিন কবিতার সামনে চুপ
করে বসে থাকি প্রবল মৌনতায়,
অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে রাখি,
যদি ধরা পড়ে যাই কবিতার কাছেই!
এক একদিন ফের যদি প্রতারিত হই
এই ভয়ে কবিতার সামনে আসতেই
ইচ্ছে করে না, তবুও কবিতার সাথেই
করি ঘরসংসার, কবিতা নিয়েই বেঁচে থাকি,
কবিতার মাঝেই হারিয়ে যাই অসীমে !