বাদামি চিল
মুতাকাব্বির মাসুদ
আমার কষ্টগুলো নষ্ট হলো অনাদরে-অবহেলায়
বুকের ভেতর ভিসুভিয়াস এক শুভাননের কান্না
আগুনমুখো খরতাপ-এক অন্ধকার দুর্জ্ঞেয় নিশুতি
নিরম্বু নিজন গোরের বিগত প্রাণ
একাকী শব্দহীন স্তব্ধতা
কালের বিবর্তন-পোড়া ইটের জ্বালা
শীর্ণ নদীর নগ্ন বুকে রোদ নিয়ে খেলে
জৈবতি বালিয়াড়ি
নদীর জলে সুতোর মতো স্রোত
লাল কষ্ট-নীল কষ্টের ধারা
সাগরবুকে উন্মগ্ন আগ্নেয়াদ্রির তপ্ত ঠোঁট
জ্বালামুখের জ্বালা-কষ্টগুলো নষ্ট হলো
ভ্রষ্ট সাধুর খেলায়
উন্নিদ্র নাক্ষত্রিক নিশা-অতিপ্রাকৃত ভৌতিক ছায়া
নষ্ট আর কষ্টের অবিধেয় অসংগত যত স্খলিত সংগম
নীল বেড়ালের পিঙ্গল চোখ
দূরে কোথাও ‘গর্ভেশ্বরি’ নদীর বিপন্ন জলের কান্না
আমার বুকের ভেতর কষ্টগুলো বেমালুম নষ্ট হয়
জ্বলেজ্বলে কালোকোলো আংরার মতো
রূপোলী ছাই বাদামি চিলের ডানায় নিঃশব্দে স্তনিত হয়
কোনো এক সরোদ রাগিণীর বিষাদিত সুরে
পুর্ণিমা রাতে
নিরন্ন পাখির গ্রীবায় স্পন্দিত হয়
অসুস্থ চাঁদের শ্বেত বরফের মতো বিহত কলিজা
বিহরা ফিনিক্সের ক্লান্ত ডানায় খেলে অসুয়া সময়
আর অন্তর্গূঢ় সন্তাপের অন্তর্ভেদী চিত্র
আমি এখন কষ্টগুলো নষ্ট ধূলোয় উড়িয়ে দেই
বুকের পাঁজর ভেঙ্গে কুয়াশিয়া বুঁদবুঁদে
ভাসিয়ে দেই নষ্ট নরক থেকে নেমে আসা
দেবাশ্রিত গঙ্গাজলে
এখন আমার ঘরে ফেরার পালা
ট্রেনের হুইসিলের শব্দের মতো একাকী জীবন
নদিত হয়েই হারিয়ে যায় অনুক্ষণ
মগজের ভেতর কেবলই বহুরুপি জুয়ারির
বিচিত্র সাপলুডোর খেলা
সেখানেও এক বিহড়া ভিসুভিয়াস
ক্রমাগত সফেদ দুধের মতো বলকে ওঠে আগুন দহনে
আমি মিশে যাই অনাদি মৃত্যুর মতো
দুর্বোধ্য মৃত্তিকার শরীরে
উনানের তীব্র ক্ষুধা
আমার কষ্ট মেশানো সাত্ত্বিক সত্তাগুলো গিলে খায়
অদ্ভুত লেলিহান স্বাদে
বুকের ভেতর অনন্ত প্রহর জিন্দা সরোবরে
আমি সর্গ থেকেই অন্তহীন এক
বিমূর্ত কষ্টের ফেরিওয়ালা !