মেয়ে তোকে খুব ভালোবাসি
সেলিনা হোসেন
ছুটির দিন আজ আর বাইরে বের হবার তাড়া নেই।
আমি যদি তোমায় কল দিয়ে বলি একটু বের হবে
কথার ফুলঝুরি হবো তোমার কোলে
তুমি কি খুব রাগ করবে?
নাকি মুচকি হেসে বলবে ভালোবাসি পাগলি।
ব্যস্ত শহরে রাস্তা পারাপার করতে সেই কি আমার ভয়!
তোমার অফিসে যাবার তাড়া আর আমার কলেজ,
আমি একা পার হতে ভয় পাচ্ছি,
যদি তোমার জনবহুল রাস্তায় হাতটি ধরে বসি,
তুমি কি আড় চোখে আমাকে গিলে খাবে?
নাকি আমার হাতটি ধরে নিরাপদে রাস্তা পার করে
দিয়ে বলবে ভালোবাসি পাগলি তোরে।
খুব ক্ষুধার্থ তুমি, আমি খাবার সাজিয়ে গুছিয়ে দিয়েছি,
তুমি পরম তৃপ্তি নিয়ে লোকমা মুখে দিচ্ছ,
ভর্তা, ভাজি,ডাল আর মাছের ঝুল।
আমি অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে তোমার খাওয়ার স্বাদ নিচ্ছি।
আমিতো মাছের কাঁটা বেছে খেতে পারি না।
তখন যদি তোমাকে ভয়ে ভীত হয়ে বলি,
কাঁটা বেছে দিবা আমি খেতে পারছি না।
তখন তুমি কি বিরক্তি প্রকাশ করবে,
নাকি মাছের কাঁটা বেছে দিয়ে মুখে লোকমা
তুলে দিয়ে বলবে ভালোবাসি পাগলি রে।
এ দোকান সে দোকান ঘুরে ঘুরে আমরা কেনাকাটা করছি
আর তুমি বিল দিচ্ছ আর আমি ব্যাগগুলো বয়ে নিয়ে
চলেছি তোমার পিছু পিছু।
হঠাৎ তুমি খেয়াল করলে আমি এতো ব্যাগ নিয়ে
তোমার সাথে পায়ে পা মিলিয়ে চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে,
তখন কি তুমি আমাকে রেখেই বাসায় চলে যাবা?
নাকি আমার হাত থেকে ব্যাগগুলো নিয়ে বলবে,
আমার হাতটি শক্ত করে ধরে রাখ যেন আমি হারিয়ে না ফেলি তোমায় আর মৃদু হেসে বলবে
ভালোবাসি পাগলি তোরে।
হঠাৎ কথা নাই বার্তা নাই রোদেলা দুপুরে ঝুম বৃষ্টি
তুমি সকল সময় আমাকে মনে করিয়ে দাও ছাতা
নিয়ে বের হতে, কিন্তু আমি প্রায় ভুলে যাই ছাতা নিতে।
তুমি কি কাকভেজা হয়ে আমার সাথে চিৎকার চেচামেচি করবে নাকি খুব উৎভাসিত হয়ে
আমার সামনে হাঁটু ঘেরে বসে বলবে,
আরো অনেকগুলো বর্ষা মৌসুমে আমি শুধুই
তোমাকে চাই, কারন ভালোবাসি পাগলি তোরে।
অনেকক্ষন ধরে আমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছ
শিমুলগাছের তলায়।
মুঠোয় মুঠোয় বাদাম খেয়ে খেয়ে
কিন্তু আমি যথাসময়ে আমি উপস্থিত হতে পারিনি,
রাস্তায় খুব জ্যাম ছিল,
তুমি কি আমাকে অনেক গালমন্দ করে চলে যাবে?
নাকি শুধুই আমার আসার অপেক্ষায় পথপানে চেয়ে
রইবে আর আমাকে দেখে সামনে এগিয়ে এসে
হাসি মুখে বলবে আমার বুঝি চিন্তা হয়না?
ভালোবাসি পাগলিরে।
খুব ভালোবাসি।