১
‘একুশের ঋণ’
রেশমা বেগম
ফাল্গুনের রক্ত পলাশের রাঙা প্রহরে
একুশ তুমি প্রতিবারই আসো
স্বপ্রতাপে গৌরব গাঁথা ঐতিহ্য লয়ে,
আলতো স্পর্শে শিমুলের রঙে
রাঙিয়ে দাও জাতির হৃদয়-কাননের
সন্ধ্যা মালতী, মাধবীলতাকে।
চিত্ত অধীরতায় ব্যাকুল মোরা করি
মাতৃভাষার বন্দনা, পুষ্পস্তবকের
মহা-অর্ঘের জ্বলজ্বলে তাঁরায় ভেসে
বেড়াই সারাবেলা।
একুশ বলো এবার তোমার মনে কি কথা
ছিল মোদের অজানা-
বলো একুশ! নয় কোন সংকোচ-লজ্জা
গোপনীয়তার আচ্ছাদন;
মাতৃভাষা তুমি মিশেছো আত্মার সুনিবিড়
পর্বে মর্মে-মর্মে শুভ্র স্নিগ্ধ রুপোর-
কাঠির জাদুর মোহে-
তোমায় বক্ষে ধারণ করি বলে আজ
গাই বাংলায় গান, লিখি বাংলার
শব্দের সম্ভার।
এতক্ষণ বন্দনা করলাম মাতৃ-সম মায়ের
ভাষার গুনো কীর্তন গান!
একূশ এবার চলো তোমার আমার
অসম্পাদিত আলাপচারিতা গুলো
করি বিশ্লেষণ, সম্পাদন।
কারণ জবাবদিহিতার পালা রয়েছে সদা
সুতীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দণ্ডায়মান!
রক্তের ঋণে ঋণী হয়েছি সেই বায়ান্নর
ফাল্গুনের টকটকে রক্তিম আভায়
রঞ্জিত
মহা ত্যাগের দিন লিপিকা থেকে।
আজ মোরা নই অবলা জাতি করতে হবে
মীমাংসা অসংলগ্ন কার্যবিধি।
কাঁধে ঋণ বহন করা নয় আর সম্ভব,
মাতৃভাষার মর্যাদা-মূল্যায়নে
রয়েছে কি কোনো ফাঁকি!
বুকের ধন মাতৃভাষার সনদ প্রাপ্তি করেছে
মহীয়ান-গৌরবান্বিত জাতিকে
বিশ্ব মাতৃভাষার মসনদে।
২
মাতৃভাষা
মুহাম্মাদ কাউসার
মাতৃভাষা সেতো আমার মায়ের মুখের বুলি,
অবুঝ শিশুর ঠোঁটের ফাঁকে লুকানো হাসির ঝুলি।
মাতৃভাষা সেতো বুড়ি হয়ে যাওয়া নদীর কুল,
রাতের আঁধারে ঝরে যাওয়া নয়তো শিউলি ফুল।
মাতৃভাষা সেতো পাখির কণ্ঠে গাওয়া সুর,
গায়ের বঁধুর গল্পে কেটে যাওয়া ক্লান্ত দুপুর।
মাতৃভাষা সেতো সাদা-কালো মেঘের ভেলা,
শত শহীদের রক্তে গাথা মায়ের গলার মালা।
মাতৃভাষা সেতো পথিকের পথ চলা অবিরাম,
ভাষা শহীদদের দিতে পেরেছি কি সঠিক দাম?
মাতৃভাষা সেতো ঘটিয়েছে দুশমনের অবসান,
তবুও আজ গাইছি মোরা বিদেশি ভাষার গুনগান।
কবি মুহাম্মাদ কাউসার
৩
হৃদয়ে একুশ
শিখা হাসান
১৯৫২সাল-
বাংলা ভাষার এক নতুন অধ্যায়ের নাম।
১৯৫২ সাল-
বাঙালি জাতির এক ঐতিহাসিক স্মরণ কাল।
১৯৫২ সাল-
শুরু হয় তুমুল আন্দোলন
মিছিলে মিছিলে ছাত্ররা হলো উত্তাল।
১৯৫২ সাল-
আজ স্বাধীন ভূখন্ডে তাইতো করছি আমরা
আমাদের মায়ের ভাষায় আলাপন।
১৯৫২ সাল-
সালাম,রফিক, জব্বারের
তাজা রক্তের বিনিময়ে পেলাম
মাতৃভাষার প্রাণ।
হে ভাষা সৈনিকরা তোমাদের প্রতি রইলো আমার
বিনম্র সালাম।