শরৎ দেখা
রীতা ধর
ভোরের শিশিরে সোদামাটির গন্ধ মেখে
কোমর দোলায় শরৎ পাখি,
প্রচ্ছন্ন প্রভাতে শাপলাদিঘির শানবাঁধানো
ঘাটে বাঁশবাগানের ঐ ফাঁকে
দেখা হল শুভ্র আকাশ,,
নীলাম্বরী সোনারোদে মেঘেরা
আপন বিভাসে আঁকে শরৎ আলপনা,
বেজে উঠে শঙ্খ, বেজে উঠে কাঁসর
ঢাকের কাঠিতে এলো আগমনি বোল।
সপ্তডিঙা বহরের মতো পাল তোলা
মেঘের ভেলা কাঁধে বয়ে যায় মেঘ মল্লার।
ঐ দূরে তেপান্তরের পথে নববধূর পালকি
চলে কাশ দুলুনির তালে, চোখের কাজলে দোলে কল্পলোকের স্বপ্ন।
নদীর একুল কাশের হৃদ্যতায় বাঁধে
ওকুলের শূন্য চর।
সূর্যাক্রান্ত বালিহাঁস যুগল প্রেমে করে
নিকুঞ্জ বিহার।
গিরিধারী মুরারী মোহন,কোন রাখালের
হৃদয়ে জাগাও মনোহারি বৃন্দাবন,
আলতা পায়ে ঝুমুর তালে শারদীয়া
ওড়ায় আঁচল সুদূর কাশের বন!
দিকে দিকে মঙ্গলধ্বনি, মহালয়ার বাদ্য বাদনে মৃত্তিকার আঁচল ভরে শস্য ফুলে ফলে।
দিনমনি চোখ মেলে পুণ্যতোয়ায় ফোটে থাকা পদ্মের গায়ে,
কামিনী মল্লিকা আর দোলনচাঁপার গন্ধে ভুবন যেন সুবাসিত
স্বর্ণরথে সাজায় কবিতার বাসর।
শরৎ রানী, শিউলি বিছিয়ে ঘাসের বুকে মেঠোপথের বাঁকে বাঁকে,
শিশির ভেজা পায়ের চিহ্ন নিয়ে
দেখা দিলে শরতের ভোরে।