খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক দিলু রোকিবা এর নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে লেখা কবিতা “ধর্ষক হতে সাবধান ”

858
খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক দিলু রোকিবা এর নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে লেখা কবিতা “ধর্ষক হতে সাবধান ”

ধর্ষক হতে সাবধান

__________/ দিলু রোকিবা ____/

বহুবার ভেবেছি ধর্ষকদের ব্যাপারে কি লিখবো !
ক ‘দিন রাত- দিন হেড নিউজ, কবিতা , মিছিল, শ্লোগানে আমি মূক!

কিন্তু আমার আঙুল আমার করতল আমার কলমের পবিত্র কালি …
এই সব ভীতু কুরক্তের কালিমা মাখতে চায়নি আমার কলম, ভাষা—
সুবচনের সঙ্গেই আরাধ্য আমি,

বুক ভরা ঘৃণা আর ক্রোধ নিয়ে আমার বালিশে যখন মধ্যরাত নামে….
তখন ঘুমের ঘোরে একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি…
এটা কোনো কবিতা না ! নিছক স্বপ্ন!
চোখ ভেজা ফরিয়াদির স্বপ্পটা দেখে শিউরে উঠি …!!
তবুও দেখলাম তো!
ঐ ফুলের মত মেয়ের জন্য নেগেটিভ রক্ত চেয়ে যোগাযোগের মাধ্যমে–
হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছেন এক অসহায় “মা’ আলাদা করে তাতে লেখা —

” মাতাল হলেও আছে ক’ ব্যাগ রক্ত,
কিন্তু কোনো ধর্ষকের জন্য রক্ত নেই ….
ছিন্ন ভিন্ন মেয়ের দেহ,
শঙ্কিত ‘মা’
——– কি হবে ?
অজানা অশনি সংকেতে , কি নির্লজ্জ!
আর এদের আইন রিতী- নীতি,
ধর্ষক আর খুনির রক্ত লাল চোখের কি দাপট!
এ কোন সমাজের স্বপ্ন দেখি!
ভোরে মলাটের আস্তরণে হাতে তুলে নিলাম কলম ইচ্ছা- আর তীব্র ঘেন্না হচ্ছে …

ঝটপট একজন আইনজীবী তাঁর মনের জানালায় একটি পেরেক ঠুকে দিলেন,
আর বাইরে দেয়ালে দেয়ালে সাদা- কালো পোস্টার।

“ধর্ষকের সুপারিশ করি না”

এলাকাজুড়ে ছোট্টছোট্ট বর্ডারে লেখা —

“ধর্ষকের প্রবেশ নিষিদ্ধ”

মুদির দোকানের শাটারে লিখা – বন্ধ!

“ধর্ষকের কাছে বিক্রি করি না….

ধুধু প্রান্তরে অনেক কটা ক্ষুধার্ত শকুন একটি লাশ পেয়েও …

কলিজাটায় একটা ঠোকরও দেইনি…

কারণ সেই কলিজায় ধর্ষকের সিল মারা …

শকুনের চোখও ধর্ষক চেনে!!

অথচ আইন চেনে না !
কি বিচিত্র আমার স্বপ্ন, আর সেলুকাস এই লাল সবুজের দেশ?

কোরান বাইবেল গীতার শ্লোকে শ্লোকে লেখা এক করুণ আর্তি …
ধর্ষকের হাত ছোবেনা
আমায়…
সবাই জানে ধর্ষক চেনে,
কেবল ঐ আইনের চোখ কালো কাপড়ে ঢাকা!
হায়, কপাল ঐ মা– মেয়ের শুধু আইন চিনছেনা!!
বিধাতার কাছে
যেদিন প্রথম তর্ক করে ফয়সালা হয়েছিল যে ধর্ষকের বিচার নরকেই হবে…. !
ঠিক সেদিন কি বুঝেছিল গভীর রাতে,
মনুষ্যত্ব আর মূল্যবোধ হয়না হাটে বেচা কেনা!
—- ধর্ষকের সমাধিতে মাটি নিজের শরীরের ঐ অংশটুকু কেটে বিচ্ছিন্ন করেছে…
যেমন শরীরে টিউমার হলে ডাক্তার কাটে , পরে বায়েপ্সি হয়,
কিন্তু এদের বায়েপ্সি কোন ডাক্তার করবে?
—– প্রশ্ন বিদ্ধ হলাম স্বপ্নের ঘোরে ,
মাটিরে মাটি চেনে,
নরক ও মাটি — মা– চেনে!
আর ধর্ষক ও মাটি চেনে …
কেবল আইনই চেনেনা,
—— এর সমাধান দেবেন কি ! ঋষি, মুনি,
পতিতাপশ্লী আছে, ধর্ষকপাড়া নেই কেন??
—— এই পাড়া খোলা হোক…..
কি দরকার নিরীহ মা – বোনের, শিশুর ওপর কু-চোখে তাকানোর?
কারণ যাদের জন্ম ঐ জারজ বীজের…
!! সেখানে একে অপরকে ধর্ষণ করুক বিনা বাধায়, বিনা দ্বিধায়

মৃত্যুর পরেও ধর্ষণ করুক ….না …

কারন ওদের লাশতো মাটিতে মিশবে না …কখনোই!!

আর সবাই জানে —-

শকুনেরা সব মরা খায় না …
এই মা — মেয়েদের লজ্জা ,হায়া দূর করতে জেগে ওঠো নারী পুরুষ সবাই …..
ইহকালে বিচার না হলেও বিধিই এর বড়ো বিচারক…
এই তো সোনার মেয়ের ভাগ্য— লিপিকা….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here