“অভ্রনীল আয়োজনে ” কবিতাটি লিখেছেন খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক হাসিনা ইসলাম সীমা

445
“অভ্রনীল আয়োজনে ” কবিতাটি লিখেছেন খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক হাসিনা ইসলাম সীমা

অভ্রনীল আয়োজনে

               হাসিনা ইসলাম সীমা

আমি তো কবি কিংবা বাচিক শিল্পী নই
চাইনি কারো বাহবা পেতে
তীব্র অর্ন্তদহনে ভস্মীভূত হতে হতে
বুকের ভেতরটা দুমডে্ মুচড়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেত ।

রূপ ছিলো,গুণ ছিলো কিন্তু বিয়ে….
পাড়া-পড়শি বলতো আমার নাকি বিয়ে হচ্ছে না ।
বহু মানত,পড়াপানি আর ঝাঁড়ফুকের পর
হঠাৎ একদিন বিয়ে হলো ।

ছেলে পুলের মুখ আর দেখা হলো না ।
ডাক্তার সাহেব আমার কোনো দোষ পেলেন না ।
স্বামী; সে তো পুরুষ মানুষ তার আবার দোষ কি !
সমাজের শত অলক্ষণে পদবীগুলো
আমায় চরম নিষ্ঠুরতায় জড়িয়ে নিলো ।

স্বামীর আবার নতুন স্ত্রী লাগবে
কারণ আমি বন্ধ্যা—
কোনো সংস্কারই আজ আমার বন্ধ্যাত্বকে
ধুলায় মিশিয়ে দিতে পারছে না ।
দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর হয়ে এগুতে লাগলো কষ্টের রেখাপাতগুলো ।
বাড়িতে হঠাৎ এক সন্ধ্যায় ভীষণ রকম জমকালো আয়োজন
সেই আয়োজনে আমি কেমন যেন বেমানান ।
আমার স্বামীর নববধূর পঞ্চম বিবাহ বার্ষিকী
একটি দত্তক উপহার পেয়েছেন স্বামীর বালিকা বধূ ।

বাড়িময় মহোৎসব;
আমি অমর্ষ এক কঠিন ধ্যানে
অভ্রংলিহ স্বরে দু’চারটি লাইন বলে উঠলাম
হৃদয়াঙ্গনে সিগ্ধতা অনুভব করার ব্যর্থ প্রয়াসে !
পেলাম অনেকের বাহ্ বা ।
সেটাই নাকি কবিতা;
আর আমি হয়ে উঠলাম বাচিক শিল্পী ।

কবি হতে যদি এত কষ্ট পেতে হয়
তবে আমি কবি হতে চাইনা।
তোমরা আমার অতীতকে ফিরিয়ে দাও
আমার ভালোবাসাকে এনে দাও অভ্রনীল আয়োজনে।
এনে দাও অভ্রনীল আয়োজনে।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here