যাদুর চেরাগ
– অমিতাভ মীর
পান্তা আমানি জুটলে সকালে দুপুর উপোষে কাটে,
কখনো সখনো নিদ্রা আসেনি খিদের চরম সাঁটে,
জীর্ণ কাপড়ে কেটেছে কৈশোর, যৌবনের তীরে বসে;
ছিঁচকে চুরিতে পড়লো জড়িয়ে সঙ্গ দোষের বশে।
অবহেলা আর শত অপমানে লজ্জা জাগেনি মোটে,
ছিঁচকেমি ছেড়ে রাজনীতি দলে দিলো যোগ এক জোটে।
ভিখে দলদাস পেয়ে গেল ব্যাস যাদুর চেরাগ হাতে,
দখল-লুটের মচ্ছব তুলে লাফিয়ে উঠলো জাতে।
বাহারি পোশাকে বাড়ছে জৌলুশ শরীরের ভাঁজে ভাঁজে,
কোরমা পোলাও হরদম চলে পান্তা বাসির খাঁজে।
আলিশান বাড়ি নামি-দামি গাড়ি, কাঁড়ি কাঁড়ি জমে টাকা,
ক্যাসিনো কাণ্ড ভরায় ভাণ্ড; ঘোরায় দলের চাকা।
বেপরোয়া চাল রাজনীতি ঢাল, রুখবে সাধ্য কার?
দল ছায়া দিলে বস্তির ছেলে হয়ে যায় সরদার।
আইন-বিচার নিভৃতে কাঁদে, নিরীহ পড়ছে ফাঁদে,
দলদাস মিলে ঐক্য গড়েছে আর কে তাদের বাঁধে!
চরমপন্থী, সমাজের কীট প্রশ্রয় পেলে দলে,
সহস্র কোটি কামাই নিমেষে যাদুই চেরাগ বলে।
ক্ষমতার বলে বলীয়ান তারা সমাজে ছড়ায় ভাঁপ,
ভাগবাটোয়ারা ঠিকঠাক হলে সাতখুন হয় মাফ।
রাজনীতি ছিলো আমিরের হাতে সততা সেখানে ধারা,
ভিখিরীর হাতে রাজনীতি পড়ে কর্ম হয়েছে সারা।
দেশকে বাঁচাতে রুখতেই হবে পঙ্কিলতার স্রোত,
ঘুমিও না আর, জাগো এই বেলা; নাও মুক্তির ব্রত।