কলমযোদ্ধা তাসলিমা খায়রুন এর জীবন বোধের লেখা “কোন এক গ্রামে,এক প্রবাসী স্বামীর,নববধূর জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ কাহিনী ”

605
কলমযোদ্ধা- তাসলিমা খায়রুন এর জীবন বোধের লেখা “কোন এক গ্রামে, এক প্রবাসী স্বামীর,নববধূর জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ কাহিনী ”

কোন এক গ্রামে, এক প্রবাসী স্বামীর,
নববধূর জীবনে ঘটে যাওয়া করুণ কাহিনী
————————————————————
                                            তাসলিমা খায়রুন

কতলা দিন অয় বিদেশ গেছেন,
আইজ দুই বছর,।
মনে আছে,কোনদিন গেছলেন?
বিয়ার একমাস পর!
কেমুন জ্বালা কেমনে বুজাই,
কেমনে কাডে রাইত।
দুর আর বাললাগেনা,
তাগদা আইওন বাইত।
মইদ্যে মইদ্যে কি মনে অয় জানেন?
আমি বিয়া করছি মাইনষেরেনা,
মোবাইলে ইমোরে,হেই কতাডা মানেন?
হারাদিনঐ মনডা থাহে মোবাইলো,
এই বুঝি ডাক দিলো,
রাইতে যহন হুইয়া পড়ি,মোবাইল
থাহে দিলো,,।
ইমোর মইদ্যে আমনে আইয়েন,
যতখন হজাগ থাহি,
কিযে করে শইলও মনে,
তবুও পরাণ বাইন্ধা রাহি।
যাউক হুনেন,,,
আর কত কতা কয়াম,
আমনেও কিছু কন,অহন গুমাই যায়াম।
স্বামী :-হুনলাম সোনা তোমার কতা,
কিতা কইতাম কও,
তোমারে ছাড়া আমিও কি বালা থাহি,
তুমি বুইজ্জা লও।
জানরে আমার কষ্ট কর আর কয়ডা দিন,
আর কয়ডা দিন পরঐ আমার,
শোদ অইবো ঋণ,।
কয়দিন পর,
বউঃ- হুনেন আইজকা একটা অন্য কতা কই,
মনডা যহন বাল লাগেনা,
ঘাটলাত যাইয়া বই,।
কাইলকাও গেছিলাম,আছলাম বইয়া জুত,
আৎকা দেহি কেডায় জানি চাইয়া রইছে,
ওমা,!! হেতে চেয়ারম্যানের পুত।
কাছে আইয়া এমনে হেমনে
আমনের কতা জিগায়,
আর কেমনে জানি চোখ গুরাইয়া
আমার শইলের ফাইল চায়।
স্বামীঃ- ওমা! এইডা কিতা কও,?
ঘাটলাত কইলাম আর যাইওনা সোনা,
হেতে কিন্তু বুইজ্জা লইও,
মানুষ বালানা,।
আরো কয়দিন পর,
বউঃ-আমনেরে একটা কতা কয়াম কয়াম,
কইতে লাগে ডরও,
চেয়ারম্যানের পুত,,
হেতে কিন্তু আমারে বহুত জ্বালায়,
আৎকা আইয়া উডে গরো।
রঙ্গ রসের কইয়া কতা,আদর হোয়াগ দেহায়,
এদিক হেদিক চাইয়া, শইলো আত দিতো চায়।
কত কিছু চালাকি করি হেতের লগে,
ইতা কয়াম কারে,
মাও কিছু করতারেনা,
মাও ডরায় তারে।
মেজাজডা যে কিতা করে,
ফাইট্টা উডে মন,
আমনেকি দেশো কোনো
কাম পাইছলেন না,
হেইডা দেহি কন?
স্বামী :-দেশো কোনো কাম পাইলে কি
বিদেশ পইরা রই?
মন দিয়া হোনো তুমি,
একটা কতা কই,।
মারে পাডাও চেয়ারম্যান বাইত,
কইত হেতের কতা,
তুমিও সোনা সাবদানে থাইক্কো
নইলে খাইবা মাতা।
কয়দিন পরঃ-
বউঃ- অহন আমি কিতা করাম,
কই পায়াম বুজ,
বেবাগ বলে আমারঐ দুষ,
অইছে কানাঘুষ।
চেয়ারম্যানের পুতে কইছে,
বইবো সালিস বাইত,
শাস্তি অইবো বেতের বারি,
মারবো আমার জাইত।
স্বামী : – এতো সোজা!!! দেশো তো আইন
আদালত আছে,?
বউঃ- কিতা কয়াম,আমার আর কেডা আছে,
আমনেও নাই কাছে।
কয়েক দিন পরঃ-
বউঃ- সালিসের দিন ঘনাই আইছে,
বইবো সালিস কাইল,
আপনে কোন দুখ নিয়ুন না,
দিয়ুন না যে গাইল।
অফমানের তুন মরন বালা,
লইছি আতো দড়ি।
হগ্গলে চায় আমি যেন আত্মহত্যা করি।
কলের তলে গেছলাম আমি,
হগলে কেমনে জানি চায়,
পেট্টা পুড়ে মাওর লাইগ্গা,
কেমনে থাকবো মায়।
স্বামীঃ-উচ্চ স্বরে কান্না করতে করতে,
না না সোনা যাইও নাগো,
যাইওনা আমায় ছাড়ি,
এইদিন দেখবার লাইগ্গা বুজি
আমরা প্রবাস করি?
করজোরে কইলাম আমি
সকল ভাইয়েরারে,
বিয়ার পরে তোমরা কেউ,
বিদেশ কইরো নারে,।
নইলে তোমার বউয়ে একদিন
গলায় দিবো দড়ি,
নইলে ভাগবো তোমার টাকা লইয়া,
তহন যাইবা মরি।।

প্রবাসী বউদের কত চাকচিক্য আমরা দেখি,তবে অনেকেই অনেক সমস্যা পোহায়,একা দুজনের দায়িত্ব পালন করে, এটা আমরা বুঝিনা,,উনাদের নিয়ে সমালোচনা করি।
যেটা মোটেই ঠিক নয়,,আমার এই লিখাটা অনেক দিন আগের শোনা একটা কাহিনী,,,তখন হয়তো মোবাইল ছিলোনা,,তখন তো প্রবাসীদের আরো কষ্ট ছিলো,। হঠাৎ মনে হলো তাই আমি আমার মত লিখলাম। কোন প্রবাসীরা দুঃখ পেলে বা কোনো চেয়ারম্যানের ছেলেরা নিজেকে ছোট মনে করলে, আমি দুঃখিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here