যুক্তরাজ্য থেকে লেখক,কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ এর লেখা জীবন চিত্রের প্রবন্ধ“করোনা পরবর্তী পৃথিবীর বুকে দেশ আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াক ”

564
যুক্তরাজ্য থেকে লেখক,কবি এ কে এম আব্দুল্লাহ

করোনা পরবর্তী পৃথিবীর বুকে দেশ আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াক—

                                             -এ কে এম আব্দুল্লাহ

করোনা পরবর্তী পৃথিবীর বুকে আমাদের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে,ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক মেধা সম্পন্ন নেতৃত্ব, শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও চিকিৎসায় স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। করোনার এই দুর্যোগময় সময়ে আমরা যদি লক্ষ্য করি, তাহলে দেখব ‘সময়’চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ সুন্দরময় করতে হলে,তথ্যপ্রযুক্তির এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে বর্তমানের এই জংধরা মাথার নেতাদের দ্বারা কিছুই হবে না। এখন বিশ্বে করোনার মহামারি চলছে। এরপর আবার হয়ত আসবে অন্য কোনো মহামরি। অন্য কোনো কঠিন দুর্যোগময় সময়। এখন পৃথিবী একটি বিশেষ সময়ের ভেতর প্রবেশ করছে, তাই আমাদেরকে সবসময় যেকোনো বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা জানি একটি দেশ পরিচালনা হয় একটিটিমের মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশে সব বিষয়ে যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা হস্তক্ষেপ করতে হয়। কারণ তাঁরটিম অকর্মক। ব্যার্থ। অমেধাবী। যার ফলে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের কাজ সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রীর উপর পড়ছে বাড়তি চাপ। উনার বয়স হচ্ছে। একজন প্রধানমন্ত্রী শুধু দল, দেশ নয় ; বহুজাতিক অঙ্গনে বিশ্ব নেতাদের সাথেও নেতৃত্ব দিতে হয়। এখন দলের নেতা কর্মী, এমপি, মন্ত্রী,বাটপারদের কারণে অনেক কাজ নিজে করতে হয়। কিন্তু বাড়তি প্রেসারের কারণে যদি অসময়ে বিশ্রামের প্রয়োজন হয় ; তাহলে এই অবস্থায় দেশের ভবিষযৎ নেতৃত্বের কী হবে ? তাই প্রধানমন্ত্রীকে দেশ পরিচালনার জন্য এখনই একঝাঁক ইয়াং কর্মঠ,সৎ নেতৃত্ব তৈরি করা জরুরী, যাতে তাঁর পরামর্শে দেশের মানুষের জন্য কাজ করে। করোনার এই মহামারী মোকাবেলায় বিশ্বের সব দেশই এখন নিজের দেশ, মানুষের জন্য ব্যাস্ত। বাংলাদেশও এর ব্যাতিক্রম নয়। ইউকে, কানাডার মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মানুষের জন্য ঘোষণা করে চলেছেন বিভিন্ন প্যাকেজ। যা সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু অমেধাবি কিছু মন্ত্রী,চোর বাটপার কিছু চেয়ারমেন মেম্বারের কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে অনেক প্রচেষ্ঠা। আমাদের দেশে অশিক্ষিত, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। এসব সামাল দিয়ে এই মহামারি মোকাবিলা অনেক দূরহ। বিশ্বের প্রতিটি দেশে সরকার দল বিরোধী দল এবং জনগণ মিলে-মিশে দেশের মানুষের জন্য কাজ করছে। তবুও হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশ অসংখ্য বিরোধী দল আছে। কিন্তু দেশের এই দুর্যোগময় সময়ে তাদের কোনো সহযোগিতা চোখে পড়ে না। রাজনীতিই মানুষের জন্য কী সবকিছু ? মনে রাখা দরকার, রাজনীতিবীদ হওয়ার পূর্বে মানুষ হওয়া খুব জরুরী।

ভবিষ্যতের বিশ্বে নিজেদের অস্থিত্ব রক্ষায় অনেক কঠিন চ্যালেন্জগুলোর মধ্যে অর্থনীতি হচ্ছে আরও একটি প্রধান অন্তরায়। তাই আসন্ন সময়ে শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তুলতে আমাদের প্রয়োজন আধুনিক মেধাসম্পন্ন নেতা ; যারা এই ট্যাকনোলোজির যুগে বিশ্বের সাথে তাল দিয়ে দেশের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে। সেই সাথে দেশের মানবসম্পদ কাজে লাগিয়ে অর্জন করতে পারে শক্তিশালী আর্থিক সক্ষমতা। মনে রাখতে হবে শুধু মানচিত্র মেপে রাজনিতীর যুগ নেই। তাই করোনা পরবর্তি সময়ে বিশ্বে এক নতুন পরিবর্তন আসবে। সবগুলো দেশই নিজেকে ঢেলে সাজানোর প্রচেষ্ঠা করবে। পরবর্তী যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় নিজেকে প্রস্তুত করবে আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক নেতৃত্ব দিয়ে। আমাদেরকেও সেভাবে ভাবতে হবে। মানবতাবোধ জাগ্রত করে মানব কল্যাণে প্রস্তুত থাকতে হবে।

শুধু রাজনীতির খাতিরে রাজনীতি কিংবা নিজের আখের গোছাতে রাজনীতি নয়। দেশ এবং মানুষের সেবার জন্য রাজনীতি করার মন মানসিকতা নিয়েই মাঠে নামুন। সেরকম নেতৃত্ব গঠন করা এখন সময়ের দাবী। সেই সাথে একটি শিক্ষিত জনগোষ্টি গড়ে তুলতে শিক্ষার ক্ষেত্রে নিতে হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। মানবতাবোধ নিয়ে বড় হোক আমাদের প্রজন্ম। করোনার এই দুর্যোগে সচেতন মানুষ, সরকার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে লকডাউন বা কোয়ারেন্টিনের ফল। তাই বিশাল অশিক্ষিত জনগোষ্টি এবং ঘরহীন মানুষের জন্য ব্যাবস্থা করা অত্যন্ত জরুরী। এসবের জন্য প্রয়োজন সেই শক্তিশালী অর্থনীতি, সঠিক নেতৃত্ব।

আমরা জানি একটি ঘটনা, নতুন আরও একটি ঘটনার ভেতর হারিয়ে যায়। তাই কিছুদিন পর মানুষ ভুলে যায় ঘটে যাওয়া কষ্ট। নিজেকে হারিয়ে ফেলে সাময়িক সুখে। না। করোনার এই মহামারি শেষে আমরা যেন ভুলে না যাই ক্ষত। আমরা পরিকল্পনা করে আবার যেন দেশকে সাজাই বিশ্বমানের আদলে। আজ অনেক উন্নত দেশ করোনা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। দীর্ঘ হচ্ছে লাশের লাইন। আমাদের দেশের থেকে শতভাগ উন্নত চিকিৎসা সেবা। তবুও সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে। করোনাকালের এই দৃশ্য আমাদেরকে অনেক কিছুই শিক্ষা দিচ্ছে। বিশ্বের বুকে আমাদের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে শক্তিশালী অর্থনীতি, এনার্জেটিক সৎ নেতৃত্ব ,বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার সাথে সংস্কার করতে হবে চিকিৎসা সেবায়। চিকিৎসা বিভাগকে গড়ে তুলতে হবে সত্যিকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে। সবধরনের পর্যাপ্ত সরন্জাম সহ আধুনিক করে ঢেলে সাজাতে হবে। এসবকিছু বাস্তবায়ন করতে দেশের জন্য, মানুষের জন্য প্রয়োজনে কঠোর হওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আহবান করছি। আমরা চাই করোনা র্পরবর্তী নতুন পৃথিবীতে আমাদের দেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here