করোনা থেকে মুক্তি দিবে ডেক্সামেথাসন
হাসানুজ্জামান
বিশ্ববাসী গবেষকদের দিকে তাকিয়ে আছে কখন শুনবে মহামারি করোনার ঔষধ আবিস্কার হয়েছে। সেই অপেক্ষার পালা কখন শেষ হবে। ১৮৮ দেশের ভুক্তভোগী মানুষ মাঝিবিহীন নৌকার মত হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছে। এদিকে এই ভাইরাসে মৃত্যুর ক্রমাগত সংখ্যা বাড়তেই আছে। না মানছে ইউরোপ না মানছে এশিয়া, আফ্রিকা। কোথাও থামতেই চাচ্ছে না কান্না। এমনি একটি সময়ে বিবিসি একটু আলোর ছটা বিশ্বব্যাপী ছিটিয়ে দিল। তারা গত বুধবার জোর গলায় বলতে শুরু করেছে ‘ইউরেকা ইউরেকা’। তারা দাবী করছে করোনা ভাইরাসের ঔষধ পেয়েছে। নতুন কোন ঔষধ নয়। পুরানো ঔষধ দিয়েই করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ঔষধটির নাম ‘ডেক্সামেথাসন’। সব দেশেই ঔষধ ডেক্্রামেথাসন পাওয়া যায়। ঔষধটির দাম দেখা গেছে- ডেক্সামেথাসন নামের মুখে খাওয়ার প্রতিটি টেবলেটের দাম বাংলাদেশে ৬০ পয়সা থেকে ১ টাকা ১৫ পয়সা। অপরদিকে প্রতিটি ডেক্সামেথাসন ইনজেকশনের সর্বনিন্ম দাম ১৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।
বিৃটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক ডেক্সামেথাসন প্রসঙ্গে বলেছেন-‘ বিশ্বের প্রথম করোনা ঔষধের সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ঘোষণা করতে পেরে আমরা গর্বিত’। এই পর্যন্ত এই ঔষধ নিয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কোন প্রতিক্রিয়া পওয়া যায়নি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের দাবী-গোড়া থেকে ডেক্সামেথাসন ব্যবহার করা গেলে বিৃটেনে অন্তত ৫ হাজার মৃত্যু ঠেকানো যেত। স্বাধীন আর্ন্তজাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ ওয়েলকাম হেলথ ফাউন্ডেশন’ জীবন রক্ষাকারি হিসাবে ডেক্সামেথাসনের ভ’য়শি প্রশংসা করে বলেন- ‘ স্বল্প মাত্রাতেই কাজ করবে এই ঔষধ’। ডেক্সামেথাসনের দামও সকলের আয়ত্বের মধ্যে, খুব সহজেই তা তৈরী করা যায়। ফলে এই ঔষধটি সকলের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছে। সৌদি আরব তার দেশে গত ১৭ জুন থেকে এই ঔষধটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদলের প্রধান অধ্যাপক পিটার হরবি বলেন-‘ এটাই একমাত্র ঔষধ যার প্রয়োগে মৃত্যু হার কমতে দেখা গেছে, সত্যিকার অর্থে মৃত্যুহার বেশ ভাল পরিমাণে কমে। এটি একটি সময়োপযোগী আবিস্কার ও সিদ্ধান্ত। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঔষধ প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান সীতেশ বস্ত্র বাছাড় বলেন-‘ ঔষধটি বাংলাদেশের বড় বড় ঔষধ উৎপাদনকারি কোম্পানী অনেক আগে থেকে তৈরী করছে। ’
এদিকে ইম্পেরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীদের গবেষক নেতা রবিন শ্যাটক জানান,‘ প্রথম ধাপে যে প্রতিষেধক আসছে তাতে সংক্রমণ ঠেকানো না গেলেও রোগমুক্তি ঘটবে। আপাতত স্টোই আমাদের এই সময়ের জন্য বড় প্রাপ্তি বলে ধরে নিতে হবে।’
এদিকে ভারতের চেন্নাইয়ের এক পরমাণু বিজ্ঞানী ড.কে এল সুন্দর কৃঞÍা জানান, ‘আগামী ২১ শে জুন একই সঙ্গে সূর্যের বলায়গ্রাস ও পূর্ণ গ্রাস হবে। সেদিনই করোনা পৃথিবী থেকে বিদায় নিবে।’ সূযর্ গ্রহণের সাথে করোনার জন্ম রহস্যের সংযোগ আছে দাবী করে বিজ্ঞানী কৃঞÍা আরো বলেন-‘ করোনা এসেছে মহাকাশ থেকে। ’ গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণের খবর মেলে। ২৬ ডিসেম্বর ছিল সূর্যগ্রহণ। তারপর থেকেই এমন একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। মূলত এই সূর্য গ্রহণের সময় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে রাসায়নিক বদল ঘটে। তার থেকেই করোনার জন্ম। আগামী সূর্য গ্রহণের সাথে সাথে পৃথিবী থেকে এই ভাইরাস বিলীন হয়ে যাবে। আসছে ২১ শে জুন একই সঙ্গে সূর্যের বলয় গ্রাস ও পূর্ণগ্রাস হবে। সেদিনই পৃথিবী থেকে শেষ হবে করোনার দাপট। নিজের তত্ত্বের ব্যাখ্যদিয়ে ড.কৃঞÍা আরো বলেন-‘ ২৬ ডিসেম্বরের সূযর্ গ্রহণকালে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে তড়িতাহত কণাগুলোর মধ্যে একটা বড় রাসায়নিক বদল হয়েছিল। বায়োনিউক্লিয়িার রিঅ্যাকশনে করোনার নিউক্লিয়িার তৈরী হয়। এই স্তরটিকে বলা হয় ‘ ডি-লেভেল’। তবে কিভাবে ‘ডি লেভেলে’ ভাইরাস তৈরী হয় তার কোন ব্যাখ্যা খুজে পায়নি বিজ্ঞানীরা।
( ডেক্সামেথাসন ওষুধটি প্রেসক্রিপশন ছাড়া কেনা এবং সেবন করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষভাবে অনুরাধ করা হয়েছে।)
লেখকঃ সহকারী অধ্যাপক ও সদস্য, খেলাঘর কেন্দ্রিয় কমিটি।
মোবাঃ ০১৭১১-১০৮৭৩৬