শিক্ষকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন !!!!!!
ডাক্তার রীতা ওঝা
জীবন চলার পথে যখনই মানুষ উপকৃত হয়েছে তখনই তার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আসছে। তবে কেউ করছে হৃদয় থেকে, কেউ হাসিমুখে, নয়তো অনিচ্ছায়, আবার হয়তো না করেও থাকে।
সময় যেমন নিজস্ব গতিতে নিরন্তর ছুটে চলছে তেমনি আমাদের ও প্রায় সবকিছুর পরিবর্তন হচ্ছে। এমনকি মুখে মুখে ও ছড়িয়ে পড়ছে নিয়ম পরিবর্তন। কিন্তু প্রকৃতির কাছে মাথা নত হতেই হয় । তবে হঠাৎ করে এক পরিবেশ থেকে অন্য রকম পরিস্থিতিতে পদার্পণ করলে খাপ খাওয়াতে একটু সময় লাগে। তাতে ভালো মন্দ দুটোই থাকতে পারে। বড়রা সব সময় নতুনদের সুবিধার কথা প্রথমেই ভাবে। কেননা তারাই জাতির ভবিষ্যত ।
প্যানডেমিক এর আগে স্কুলে যাওয়ার সময় বাচ্চাদের মধ্যে যেমন চলে দুরন্তপনা তেমন পরিবার এর অভিভাবকদের ছিল উদ্দীপনা, ছুটে চলার ব্যস্ততা। কিন্তু এখন সময়ের পরিস্থিতিতে তারা ঘরে বসেই ডিজিটাল ডিভাইসে করে যাচ্ছে স্কুল। কখনো পড়ার টেবিলে, ডাইনিং, শুয়ে, ঘুমিয়ে, গাড়িতে,বাসে,অতিথিদের বাসায়,আড্ডার মাঝে, গ্রামের বাড়িতে, বাজারে, শপিং মলে,এমনকি বাথরুমে, তবে কখনো না করে ও চলছে। কেননা ক্যামেরা বন্ধ,শব্দ বন্ধ,জোর করার সুযোগ নেই। দেরী করে স্কুলে গেলে যেমন শাস্তি দেয়ার সুযোগ ছিল এখন নেই। জানি না ভবিষ্যতে কতটুকু সুবিধা নিয়ে আসবে।পৃথিবীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া একটার পর একটা হয়তো চলতে থাকবে। তাই বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা যায় না। আর ছাত্র ছাত্রীদের মনোযোগ কতটুকু শিক্ষকরা ধরে রাখতেছেন তা নিয়ে চলছে শংসয় !!!আর প্রতিদিনের উপস্থিতি নিয়ে করে যাচ্ছে পারেন্ট মিটিং ।ক্লাস এর সময় শিক্ষকরা নাম ধরে ডেকেই যাচ্ছে কোন সাড়া নেই। মনের অজান্তেই শিক্ষক বলছে– ঘুমিয়ে পড়ছে মনে হয় , জয়েন করে অন্য কাজ করছে হয়তো, বাবা মা নেই ফাঁকি দিচ্ছে, ওহ! নিজেদের সাথে আড্ডা করে যাচ্ছে, ইচ্ছা করেই কথা বলছে না হয়তো, মিউট করে রেখেছে এরা, জয়েন করে কোথায় যায়?সুন্দর করে বলে – তোমরা কি আছো? অবশেষে ভাঙা গলায় বলে, মিস আছি, স্যার আমি আছি ।তোমরা যে আছো একটু আওয়াজ তুলো । মাত্র এই কয়জন জয়েন করছো অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমি খুবই খুশি। দয়া করে অন্যদেরও বলো ক্লাস করতে। শিক্ষক এর প্রয়োজন বলেই স্কুল আছে। জীবন গঠনের একমাত্র উপায় শুধু পড়ালেখা করে জ্ঞানার্জন করা।
তোমরা ঠিকমতো পড়ালেখা করে যাবে ।আরও চলতে থাকে সুন্দর উপদেশ মূলক কথা ।
করোনা প্যানডেমিক সময়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা অভিভাবকদের। তাদের মনে প্রকৃত শিক্ষার বীজ অবশ্যই হৃদয়ে বপন করতেই হবে ।বুঝাতে হবে সময়, শিক্ষা, কর্তব্য সম্পর্কে। জ্ঞানই শক্তি জেনেও পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। নিরন্তর ছুটে চলতে হবে আনন্দের সাথে। ত্যাগ করতে হবে অভিমান, অসৎ ভাবনা, মিথ্যাচার অবিশ্বাস ও আলস্য। মনে রাখতে হবে যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন ন্যাচারাল ডিজাস্টার যেকোনো সময় আসতেই পরে। তাই মূল্যবান সময় নষ্ট না করে আত্মবিশ্বাস রেখে সময়ের কর্ম করে ঠিকমতো করে যেতে হবে।
শিশুদের চার দেয়ালের মাঝে সব সময় ভালো লাগার কথা নয়। ওদের যেমন প্রয়োজন উন্মুক্ত আকাশ তেমন দরকার খোলা মাঠ । স্বাধীনভাবে মনে বিভিন্ন ভাবনা যেন তাদের এমনিতে চলে আসে। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির উড়ে যাওয়া দেখে পাখির মত মুক্ত হাওয়ায় উড়ে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখাতে হবে ।সব শিশুদের হৃদয়ে সুচিন্তার বীজ বপন করে দিতে হবে। বুঝাতে হবে আকাশে উড়তে পাখির মতো ডানা লাগে না, অনেক ভালো গুন থাকলে আকাশ সমান মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা যায়।পৃথিবীতে আসা মানেই নিজের কিছু করে রেখে যাওয়া। কেননা সবাই সৃষ্টির সবকিছুই নিজের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করে যাচ্ছে। কালজয়ী মানুষের জীবন থেকে সে শিক্ষাই পাই। পরিশেষে সব শিশুরাই যেন ভালো গুনের মাধ্যমে পাখির মতো ডানা মেলে উড়তে পারে। সব সময় শুভ কামনা ও আশীর্বাদ যেমন দেশের সকল শিশুদের জন্য তেমনি অনেক ধন্যবাদ দেশের সকল শিক্ষকদের জন্য।