বাইশে শ্রাবণ
নাসরিন জাহান মাধুরী
“শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে
তোমারি সুরটি আমার মুখের ‘পরে, বুকের ‘পরে ॥
পুরবের আলোর সাথে পড়ুক প্রাতে দুই নয়ানে–
নিশীথের অন্ধকারে গভীর ধারে পড়ুক প্রাণে।
নিশিদিন এই জীবনের সুখের ‘পরে দুখের ‘পরে”
২২ শে শ্রাবণ কিংবা ২৫ বৈশাখ এলেই তাঁকে মনে পড়ে তেমনটি নয়, তিঁনি থাকেন প্রতিদিনের কাজে, কাজের ফাঁকে, আলস্যে, ব্যস্ততায়, সকাল দুপুর সাঁঝে, ঋতুতে ঋতুতে, আনন্দ বেদনার কাব্যে, প্রেমে বিরহে, দুঃখ শোকে সব কিছুতেই তাঁকে পাই খুব গভীর ভাবে।
আজ ২২ শে শ্রাবণ তাঁর প্রয়াণ দিবস। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। তাঁর আত্মা দেহ ত্যাগ করেছে এই দিনে কিন্তু তিঁনি মিশে আছেন বাঙালির সত্তায়।
বর্ষা ঋতুর প্রতি তাঁর ছিলো অদ্ভুত এক মোহ, তাই তো এই বর্ষার কতো কবিতা গানে তাঁকে পাই।
তাই যেনো এই শ্রাবণেরই চলে গেলেন চির প্রস্থানে। রয়ে গেছেন বাঙালি মানব জীবনের যাপিত জীবনের কাব্য হয়ে।থাকবেন যতদিন পৃথিবী থাকবে।তিনি যেন তাই যেতে যেতেই বলে গেলেন —
“এসেছিলে তবু আস নাই জানায়ে গেলে
সমুখের পথ দিয়ে পলাতকা ছায়া ফেলে ।।
তোমার সে উদাসীনতা সত্য কিনা জানি না সে,
চঞ্চল চরণ গেল ঘাসে ঘাসে বেদনা মেলে ।।
তখন পাতায় পাতায় বিন্দু বিন্দু ঝরে জল,
শ্যামল বনান্তভূমি করে ছলোছল্ ।
তুমি চলে গেছ ধীরে ধীরে সিক্ত সমীরে
পিছনে নীপবীথিকায় রৌদ্রছায়া যায় খেলে ।।”