আমেরিকা থেকে কাব্য ভারতী কবি সাহানুকা হাসান শিখার নিজ চোখে দেখা করোনা ক্রান্তি কালের লিখা “বিভিষিকাময় দিনগুলো”

560
আমেরিকা থেকে কাব্য ভারতী কবি সাহানুকা হাসান শিখার নিজ চোখে দেখা করোনা ক্রান্তি কালের লিখা “বিভিষিকাময় দিনগুলো”

বিভিষিকাময় দিনগুলো

                              সাহানুকা হাসান শিখা

করোনাভাইরাসে বিধস্ত যুক্তরাষ্ট্র। সবচেয়ে বেশি করুণ অবস্থা দেশটির জনবহুল নগরী নিউইয়র্ক। ভাইরাসের কারণে নিউইয়র্ক এখন ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে। যে রাজ্য লাখো মানুষ স্বপ্ন নিয়ে জীবনের তাগিদে বসবাস করেন সেই রাজ্য আজ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। আর এই মৃত্যুর আতঙ্কে নিয়ে তৈরি হচ্ছে কান্নায় ভরা কিছু কথা কিছু কবিতা কিছু গল্প।

ফ্রন্ট লাইনে কাজ করা একজন সৈনিক সেও কারো বাবা, কারো সন্তান, কারো স্বামী। রাতের গভীরে বাসায় না এসে রাস্তায় গাড়ি পার্ক করে বসে হুহু করে কান্নায় ভেঙে পড়ে সেই শক্ত মনের মানুষটি, কত ভয়াবহ এই করোনার ছোঁবল কল্পনাও করা যায় না। একজন স্ত্রী,একজন মা,পেশাগত দিকে তিনি ডাক্তার অথবা স্বাস্হ্য কর্মী,হঠাৎ রাতের গভীরে বিছানা ছেড়ে তিনি উধাও!!

স্বামী খুঁজছে চারিদিকে,বাচ্চা কান্না করছে মা মা করে। কি হলো ? কোথায় সেই নারী ? শোনা গেলো কান্নার আওয়াজ! তিনি বিলাপ করে কাঁদছেন, কিন্তু কেন ? তাঁর হৃদয় জুড়ে হা হাহাকার, চোখ জুড়ে লাশের
ছবি, লরিতে লাশ লাশ আর লাশ উঠছে। কত রুগীর কতো আশা ব্যক্ত্য করেছিলো তার কাছে প্রিয়জনকে এক নজর দেখার আকুতি, সে এইটুকু করতে পারে নাই মরণ ব্যধি করোনা ভাইরাসের জন্য। সেই অনুশুচনায় আজ এই ডাক্তার এক মানসিক রুগী, ডিপ্রেশনের রুগী হয়ে তাকে কাটাতে হবে বাকিটা জীবন।সে আর কোনদিনই ভুলতে পারবে না এই বিভিষিকাময় দিনগুলোর কথা। কেউ কেউ পুরোপুরি ডিপ্রেশনে চলে গেছে, বেছে
নিয়েছে আত্মাহত্যার পথ।এমন পরিস্থিতিতে খুব কম মানুষই মানসিক সুস্থতা বোধ করছে। কিন্তু কোন উপায় নেই,অর্থনৈতিক টানা পোড়েন তো রইয়েই গেলো। সব কিছু মিলিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য ঝগড়া ঝাটি চলেই যাচ্ছে। বাচ্চারাও বিরক্ত বোধ করে,স্কুল কলেজ নেই, তারপর গৃহবন্ধি,ঘরে বাবা মার অশান্তি এই সব নিয়ে তারাও খুব একটা ভালো নেই।

ভালো নেই সংসার,ভালো নেই দেশ,ভালো নেই মহাবিশ্ব।

Content Protection by DMCA.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here